Headlines
Loading...
সামনেই বিধানসভা, বর্ধমানে বাড়ি বাড়ি পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে তৎপর পুরসভা

সামনেই বিধানসভা, বর্ধমানে বাড়ি বাড়ি পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে তৎপর পুরসভা


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: আগামী বিধানসভা এবং পুর নির্বাচনের আগেই কি বর্ধমান পুর এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের অম্রুত প্রকল্পের সুবিধা পেতে চলেছেন শহরবাসী? বস্তুত, এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বর্ধমান শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে। যদিও পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যেই অম্রুত প্রকল্পের যাবতীয় কাজ শেষ হবে এবং জলের সংযোগও সম্পূর্ণ হবে। বর্ধমান পুরসভার মুখ্য কার্য্যনির্বাহি আধিকারিক অমিত গুহ জানিয়েছেন, পুরবাসীদের ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রায় ৬০শতাংশ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই জলের সংযোগ দেওয়ার কাজও শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 


অমিত বাবু জানিয়েছেন, জলের সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে অনলাইনে আবেদনকারীদের। ইতিমধ্যে যারা আবেদন করে রেখেছিলেন, তাঁদের আবেদন কে দ্বিতীয় দফায় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। আর তৃতীয় দফায় তাদের সংযোগ দেওয়া হবে যাদের বাড়িতে ইতিমধ্যে পৌরসভার জলের লাইন রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে জলের সংযোগের জন্য আবেদন করতে পারবেন পুরবাসীরা।


 উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের অটল মিশন ফর আরবান রেজুভেনেশন এণ্ড ট্রান্সফরমেশন বা সংক্ষেপে অম্রুত প্রকল্প গৃহিত হয় ২০১৬ সালে বর্ধমান পুরসভায়। যদিও তার অনেক আগেই বর্ধমানের দামোদর থেকে জল উত্তোলন করে তা পানীয়যোগ্য করে শহরবাসীকে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল তৎকালীন বাম পুরবোর্ড। কিন্তু সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়ার পর অম্রুত প্রকল্প গৃহিত হয়। ফলে ২০১৬ সালেই শুরু হয় এই প্রকল্পের কাজ। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, দামোদর নদের জলকে পরিশুদ্ধ করে শহরবাসীকে নয়নয় করেও প্রায় ২০ বছর নিরবচ্ছিন্ন পর্যাপ্ত জল দেবার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর জন্য ২৮০ কোটি টাকার এই প্রকল্প গৃহীত হয়।


 প্রথম পর্যায়ে শহরের মধ্যে দিয়ে পাইপ লাইন পাতার কাজও শুরু করা হয়। একইসঙ্গে বর্ধমান শহরের ১০ টা জোনে ১০ টা ওভারহেড রিজার্ভার (ও এইচ আর) তৈরী হচ্ছে। শহরের খাগড়াগড়, তিনকোনিয়া বন্ধ বাস স্ট্যান্ড, খালাসি পাড়া, কানাইনাটশাল, বেচারহাট, এন ডি কায়েম লেন মিউনিসিপ্যাল স্টোর, গড়্গড়াঘাট, গোদা, নতুনগঞ্জ পাঁজা বাগান এবং লাকুর্ডি এলাকায় এই রিজার্ভারগুলো তৈরী হচ্ছে। উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে কেন্দ্র দিচ্ছে ৫০ শতাংশ, রাজ্য দিচ্ছে ৪৫ শতাংশ এবং পুরসভা দিচ্ছে ৫ শতাংশ টাকা। ইতিমধ্যে ১০০কোটি টাকা পুরসভার হাতে এসেছে। দ্বিতীয় দফায় দামোদর নদ থেকে জল তুলে তা রিজার্ভারে পাঠানোর জন্য টেণ্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গেছে। সেই কাজ সম্পন্ন হলেই জল সরবরাহের কাজ শুরু হয়ে যাবে। 


পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বর্ধমান পুর এলাকায় ২৬৬৭৬ টি বাড়িতে সংযোগ রয়েছে। রাস্তার টাইম কল রয়েছে ৭৪৫১ টি, হ্যান্ড টিউবওয়েল - ২২৩৭ টি, ডিপ টিউবওয়েল - ৫৯ টি, পাম্প হাউস - ৫৭ টি, ওভারহেড রিজার্ভার - ১৬ টি, প্রতিদিন ওয়াটার সাপ্লাই - ১২.৬০ এম এল ডি, মোট পাইপলাইন - ৩৫২ কিমি, প্রতিদিন জল দেওয়া হয় - সকাল ৬-৯ টা , দুপুর ১১-১২ টা এবং বিকাল ৪-৬ টা। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, অম্রুত প্রকল্প চালু হয়ে গেলে শহরের প্রায় সমস্ত বাড়িতেই মিলবে জলের সংযোগ এবং পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানীয় জল। লক্ষ্যমাত্রা - প্রতিদিন ৪৫.৬৭ এম এল ডি। মোট পাইপলাইন হচ্ছে ৫২৫ কিমি। 

বর্ধমান পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে বর্ধমান শহরে জনসংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৩৮ জন। বাড়ির সংখ্যা - ৬৪ হাজার। জলের চাহিদা মাথা পিছু ১৩৫ লিটার প্রতিদিন। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, অম্রুত প্রজেক্টে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩১ হাজার জনকে কানেকশন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। ধাপে ধাপে এই জলের সংযোগ দেওয়া হবে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});