Headlines
Loading...
বর্ধমানের নার্সিংহোমে করোনায় মৃত রোগীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ, চাঞ্চল্য

বর্ধমানের নার্সিংহোমে করোনায় মৃত রোগীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ, চাঞ্চল্য


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: রোগীর মৃত্যুর আগে করোনা পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানোর পরেও রিপোর্টের অপেক্ষা না করে রোগীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল বর্ধমান শহরে। এমনকি রোগীর পরিবার তাঁদের আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীদের নিয়ে শবদেহ দাহ করাতে যাওয়ার পর জানতে পারলেন রোগী করোনা সংক্রমিত ছিলেন। আর এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে শহর বর্ধমানে। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের খোসবাগানের বিসিসিইউ (বর্ধমান ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট প্রাইভেট লিমিটেড) নার্সিংহোমে। 


মৃত বিনারানী তা(৭০) এর পুত্র মুম্বাই নিবাসী বিদ্যুৎ তা এই ঘটনায়  ইতিমধ্যেই বর্ধমান সদর থানায় নার্সিংহোমের গাফিলতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি, পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব কুমার রায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, রোগী করোনা পজিটিভ ছিলেন। তবে মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ এখনো দপ্তরে জমা পড়েনি। অভিযোগ হলে সমগ্র বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। 

বিদ্যুৎ বাবু অভিযোগ করেছেন, গত ২৫অক্টোবর তাঁর মা কে খোসবাগানের বি সি সি ইউ নার্সিংহোমে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর ১নভেম্বর সকাল ৭টা ১৫মিনিটে তিন মারা যান। এর আগে নার্সিংহোমের তরফে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ করে ৩১সেপ্টেম্বর বিকেলে থাইরো কেয়ার নামে একটি ল্যাবে পাঠিয়ে ছিল নার্সিংহোম কতৃপক্ষ। কিন্তু ১নভেম্বর সকালে তার মা মারা যান। যদিও বিদ্যুৎ বাবুর অভিযোগ, সেইদিনই বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যেই মৃতার দেহ তাঁর পরিবারের হাতে দিয়ে দেয় নার্সিংহোম কতৃপক্ষ। আর এরপরই সেইদিনই সন্ধ্যায় বিনারানী তায়ের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ইতিমধ্যে শবদেহ দাহ করা হয়ে যায়।


বিদ্যুৎ বাবু অভিযোগ করেছেন, সরকারি নির্দেশিকা না মেনে কিভাবে করোনার রিপোর্ট আসার আগেই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল? পাশপাশি, রোগী যে করোনা আক্রান্ত ছিলেন সেই তথ্য পরিবার বা অন্যান্য শব যাত্রীরা জানতে না পারার ফলে অনেকেরই বিপদের সম্মুখীন হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এর ঘটনার দায়ভার কে নেবেন? এদিকে, মৃত্যুর পর নার্সিংহোমের পক্ষ থেকে রোগীর মৃত্যুর কারণ জানিয়ে পরিবারের হাতে অব্যাহতি পত্রে জানানো হয়েছে, রোগী কার্ডিয়াক আর্রেস্ট হয়ে মারা গেছেন। 

অন্যদিকে, থাইরো কেয়ার নামে যে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের রিপোর্ট নার্সিংহোমে এসে পৌঁছেছে তাতে চুড়ান্ত বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে করোনার কোনো লক্ষণ দেখানো না হলেও, একই রিপোর্টে পরে করোনা পজিটিভ জানানো হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই বর্ধমান জুড়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, করোনা আবহে বর্ধমানের বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলির কাজকর্ম অদৌ সচ্ছতার সঙ্গে হচ্ছে কিনা বা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর আদৌ কোনো পদক্ষেপ করছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন করতে শুরু করছেন শহরবাসী। যদিও বিদ্যুৎ বাবু এই ঘটনার বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});