Headlines
Loading...
বাড়ি ফেরার তাগিদে সাঁতরে ভাগীরথী পার, করোনা আতংকে ঠাঁই আমবাগানে

বাড়ি ফেরার তাগিদে সাঁতরে ভাগীরথী পার, করোনা আতংকে ঠাঁই আমবাগানে


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনা: কালনার শাসপুর গ্রামের বাসিন্দা গুরুপদ হালদার। লকডাউনের আগে নদিয়ার মাজদিয়ায় আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় আর ফিরতে পারেননি। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় গঙ্গায় ফেরি চলাচল। তৃতীয় দফায় লকডাউন শেষের মুখে গুরুপদ বাবু আর থাকতে না পেরে বাড়ি ফেরার তাগিদে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে এলেও গঙ্গার ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় বেজায় বিপাকে পড়েন তিনি। 

কিভাবে পেরোবেন নদী? কিভাবেই বা পরিবারের লোকেদের কাছে পৌঁছবেন - সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতেই ঝাঁপ দিলেন নদীতে। আর তারপর শুরু লড়াই। দাঁতে দাঁত চেপে দীর্ঘ সাঁতার। শেষমেষ সাঁতরেই ওপারের  নৃসিংহপুর ঘাট থেকে এপারের কালনা ঘাটে চলে এলেন গুরুপদ বাবু। এদিকে ঘরে ফেরার তাগিদে প্রাণ বাজি রেখে কালনায় নিজের গ্রাম শাসপুরে ফিরলেও গ্রামে ঢোকার অনুমতি পেলেন না গুরুপদ বাবু। 

ভিন জেলা থেকে এসেছেন, তাই করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে গ্রামে - এই আশংকায় গ্রামের বাইরে একটি আমবাগানে আগামী ১৪ দিন কোয়ারইন্টাইন থাকার নিদান দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এমনকি তার কাছে পরিবারে লোক ছাড়া গ্রামের মানুষ কেউ খোঁজ নিতে বা দেখা করতে যাচ্ছেন না, সমাজ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হচ্ছে গুরুপদ বাবুকে। যদিও তাঁর থাকার জন্য গ্রামবাসীরাই একটি টালির অস্থায়ী ছাউনি করে দিয়েছেন। সেখানেই মশারি টাঙিয়ে দিন-রাত কাটাতে হচ্ছে গুরুপদ বাবুকে। সকাল, দুপুর, রাতে তাঁর ছোট কন্যা বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে গিয়ে সেখানে রেখে দিয়ে আসছে। 

গুরুপদ বাবুর এখন একটাই চিন্তা - কবে শেষ হবে এই ১৪দিনের নির্বাসন। কবে আবার পরিবারের সঙ্গে একথালায় খেতে পারবেন খাবার। ফিরতে পারবেন তাঁর স্বাভাবিক জীবন যাপনে। পরিবারের সকলেও এখন তাই দিন গুনছেন বাড়ির মানুষের নির্বাসন শেষের।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});