Headlines
Loading...
বর্ধমানে রোগীকে নিজেই রক্ত দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন চিকিৎসক

বর্ধমানে রোগীকে নিজেই রক্ত দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন চিকিৎসক



সৌরীশ দে,বর্ধমান: বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্ত না মেলায় শেষমেষ রোগীর প্রয়োজনে রক্তের চাহিদা মেটালেন খোদ হাসপাতালের চিকিৎসক। মেডিসিনে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন চিকিৎসক নীলাদ্রি কয়াল নিজেই রক্ত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বৃহস্পতিবার। 

পশ্চিম বর্ধমান জেলার রূপনারায়নপুরের বাসিন্দা বাদল বিশ্বাস তাঁর মেয়ে সোমা বর্মন কে গত মঙ্গলবার কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্যানক্রিয়াস সহ অন্যান্য অঙ্গে সংক্রমণ জনিত কারণে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসেন। বাদল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ডাঃ সুমন্ত দাস এবং ডাঃ সৌম্যদীপ ঘোষ সোমা বর্মন কে পরীক্ষা করার পর হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। 



সেইমত মেয়েকে হাসপাতালের রাধারানী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরপর রোগীর প্রয়োজনে চিকিৎসক রক্তের প্রয়োজনের কথা জানান। বাদল বিশ্বাস জানিয়েছেন, এরপর রক্ত সংগ্রহ করতে ব্লাড ব্যাংকে গেলে সেখান থেকে O+ রক্ত নেই বলে জানানো হয়। তিনি জানিয়েছেন, রক্ত না পাওয়ার কথা চিকিৎসক নীলাদ্রি কয়াল কে জানালে চিকিৎসক রোগীর প্রয়োজন বুঝে নিজেই রক্ত দিতে সম্মত হন। 

চিকিৎসক নীলাদ্রি কয়াল জানিয়েছেন, আসানসোল হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে সোমা বর্মন নামে এক মহিলা কিডনির সমস্যা, মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর,এনিমিয়া সহ সংক্রমণ নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়। রোগীর শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৫.২ -এ নেমে এসেছিল। এদিন রোগীর রক্তের প্রয়োজন ছিল। 


কিন্তু ব্লাড ব্যাংকে O+ রক্ত মজুত না থাকায় রোগীর প্রয়োজনে একজন ডাক্তার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে এই ধরণের কাজ প্রয়োজনে আবার করবেন বলেও তিনি জানান। তিনি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র টাকার জন্য এই পেশায় তাঁরা থাকেন না, কাজকে ভালোবেসে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেবার চেষ্টা করেন।


বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, প্রতিদিন হাসপাতালের নির্দিষ্ট কয়েকটি বিভাগে রক্তের চাহিদা মেটাতে কখনো কখনো কিছুক্ষনের জন্য কয়েকটি গ্রুপের রক্তের মজুত কমে যায়। এদিনও কয়েকটি গ্রুপের রক্তের মজুত কমে গিয়েছিল। তবে হাসপাতালের চিকিৎসক রোগীকে নিজের রক্ত দিয়ে সত্যিই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যদিও ডেপুটি সুপার জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা সব সময়ই রোগীদের পাশে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই হাসপাতালের রক্তের চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প শুরু করা হচ্ছে। যাতে সারা বছর রক্তের সরবরাহ সঠিক থাকে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});