

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ রাত পোহালেই ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে গোটা দেশ জুড়ে। ফি বছরের মত এবছরেও স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্মান জানানো হবে জায়গায় জায়গায়। সম্প্রতি গোটা দেশ জুড়েই বেশ কিছুদিন ধরেই পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামের সন্তান বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের নামকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যেই বর্ধমান ষ্টেশনের নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করার বিষয় নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। পক্ষ বিপক্ষ সকলেই নিজেদের দাবীর প্রতি অবিচলও রয়েছেন।
কিন্তু ১৯৭৩ সালে খোদ খণ্ডঘোষের আড়াডাঙা মোড় থেকে রূপসা স্কুল মোড় পর্যন্ত যে ৩ কিমি রাস্তা রয়েছে সেই রাস্তার মাঝেই একটি সেতুর নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করা হলেও আজ তা রীতিমত অবহেলিত। এমনকি বর্তমানে এই রাস্তার হাল রীতিমত বেহহাল। খানা খন্দে ভরে সাধারনের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বটুকেশ্বর দত্তের নামে রেল ষ্টেশন করার দাবীতে যখন খোদ বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি রক্ষা কমিটির সদস্যরা সোচ্চার – তখন কংগ্রেস জমানায় তৈরী হওয়া এই সেতুর নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করা হলেও প্রায় ৪৬ বছর সেই সেতুর কোনো সংস্কারই হয়নি। রীতিমত অবহেলিত সেতুর ফলকও। ক্রমশই অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেতুর ফলকের উপর বটুকেশ্বর দত্তের নামও। অথচ তা নিয়ে কারও কোনো হেলদোলই নেই।

খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া এখবর শোনার পর দ্রুততার সঙ্গে সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে সেতুর সংস্কার করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। পাশাপাশি ওই ৩ কিমি রাস্তার নাম বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের নামেও করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, খণ্ডঘোষের রূপসা গ্রামের কৃষ্টি নামে একটি ক্লাব এই ৩ কিমি রাস্তার মেরামতির জন্য গত ৭ বছর ধরে চেষ্টা চালালেও কোনো লাভ হয়নি। ক্লাবের সদস্য তথা গ্রামবাসী সুকান্ত পাল,শিবপ্রসাদ পাল, বিশ্বজিত ঘোষ,সৌরভ রায়, দীপাঞ্জন পাল প্রমুখরা জানিয়েছেন, প্রায় ৭ বছর আগে এই ৩ কিমি রাস্তাকে পাকা করার উদ্যোগও নেওয়া হয়। যথারীতি কাজও শুরু হয়। কিন্তু দেড় কিমি পাকা করেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অথচ রাস্তার শুরুতেই লেখা হয় ৩ কিমি পাকা রাস্তা।
স্বাভাবিকভাবেই অভিযোগ ওঠে, ৩কিমি রাস্তা পাকা করার নামে দেড় কিমি রাস্তা করে বাকি টাকা কোথায় গেল? যদিও এব্যাপারে সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি খোঁজ খবর নেবেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ওই রাস্তাকে পাকা করার ব্যাপারে টেণ্ডার ডাকা হচ্ছে। ওই রাস্তার জন্য ইতিমধ্যেই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই রাস্তার ওপরই নির্ভরশীল কুমীরকোলা হাইস্কুল, রূপসা প্রাথমিক স্কুল এবং আড়ডাঙা প্রাথমিক স্কুলের অসংখ্য ছাত্রছাত্রীও। এমনকি এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করে কুমীরকোলা বর্ধমান রুটের বাসও। বটুকেশ্বর দত্তকে নিয়ে এত দাবী তাহলে কেন তাঁর নামের সেতুর সংস্কারের দাবী উঠল না গত ৪৬ বছরেও?
ওঁয়াড়ি গ্রামের বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি রক্ষা কমিটির সম্পাদক মধুসূদন চন্দ জানিয়েছেন, তাঁরা ওই সেতু সংস্কার সহ ওই রাস্তার নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করার ব্যপারে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও তা পূরণ হয়নি। এব্যাপারে তাঁরা ফের আবেদন জানাবেন। এব্যাপারে সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, যেহেতু ওই রাস্তার মাঝে ডিভিসির সেচ ক্যানেলের ওপরের যে সেতু রয়েছে যা বটুকেশ্বর দত্ত সেতু নামে পরিচিত তাই তাঁরাও ওই রাস্তার নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে ওই সেতুর উদ্বোধন করেন তত্কালীন খণ্ডঘোষের বিধায়ক মনোরঞ্জন প্রামাণিক।