Headlines
Loading...
সরকারীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বর্ধমান শহরের ৫২ বছরের ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র ভবনকে অধিগ্রহণের প্রস্তাব,আলোড়ন

সরকারীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বর্ধমান শহরের ৫২ বছরের ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র ভবনকে অধিগ্রহণের প্রস্তাব,আলোড়ন



ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের সংস্কৃতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী পীঠস্থান রবীন্দ্র ভবনকে বাঁচাতে সরকারী ভাবে অধিগ্রহণের আবেদন জানানো হল খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে।দীর্ঘদিন ধরে জেলার প্রশাসনিক স্তর থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর কাছেও দরবার করে কোনো সুফল না হওয়ায় এবার ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং রবীন্দ্রচর্চার জন্য তৈরী হওয়া এই রবীন্দ্রভবন কে আর পাঁচটা জেলার মতোই রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে চালানোর আবেদন করা হলো। 

উল্লেখ্য, বর্ধমান শহরের বুকে এই রবীন্দ্র ভবনে রয়েছে বহু মূল্যবান বইয়ের লাইব্রেরী, সংগ্রহ শালা। দু কাঠা জমির ওপর তৈরী ভবনের পাশাপাশি সম্প্রতি বর্তমান সম্পাদক আশীষ বিশ্বাসের উদ্যোগে আয় বাড়াতে তৈরী হয়েছে একটি আলাদা ভবনও। গত সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। এই বৈঠকেই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বর্ধমান রবীন্দ্র ভবনকে অধিগ্রহণের এই আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সঁপে দেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী এব্যাপারে এখনই কিছু না জানালেও রবীন্দ্র ভবনের বর্তমান পরিচালন কমিটি আশান্বিত হয়েছেন রবীন্দ্রভবনকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই কোনো না কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

 
রবীন্দ্রভবনের পরিচালন কমিটির সম্পাদক আশীষ বিশ্বাস জানিয়েছেন, রবীন্দ্রভবন পরিচালনার জন্য প্রতিমাসে প্রায় ১ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। কিন্তু সে অর্থে রবীন্দ্রভবনের আয় নেই। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের তীব্র সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। তবুও তাঁরা চেষ্টা করছেন। বর্তমানে কেয়ারটেকার, ঝাড়ুদার, নৈশ প্রহরী সহ মোট ৪জন কর্মী রয়েছেন। কিন্তু নামমাত্র টাকায় তাঁদের মাসিক বেতন দিতে হয় - যা অমানবিকও।
আশীষবাবু জানিয়েছেন, অনেক দিন ধরেই তাঁরা সরকারের কাছে এব্যাপারে আবেদন জানিয়ে আসছেন। সরকারী অনুদানের জন্যও জানিয়েছেন। কিন্তু সে অর্থে তাঁরা কিছু পাননি। সাম্প্রতিক কালে কেন্দ্রের টেগোর কালচারাল কমপ্লেক্স নামে একটি প্রকল্পে ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। ওই টাকার মধ্যে কিছু টাকা বরাদ্দ হওয়ায় তা দিয়ে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা বর্ধমান রবীন্দ্রভবনের সংস্কারের কাজ করে। 

আশীষবাবু জানিয়েছেন, বর্ধমান রবীন্দ্রভবনের রুগ্নপ্রায় অবস্থার জন্য রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীর কাছেও তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও কোনো উত্তর আসেনি। এদিকে, গত সোমবার বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা করতে আসায় এই অধিগ্রহণ সংক্রান্ত আবেদন তাঁর হাতে দেওয়া হয়। এব্যাপের জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, সরকার রবীন্দ্রভবন অধিগ্রহণ করলে তা ভালই হবে। সাংস্কৃতিক চর্চা ভালভাবে করা যাবে। রবীন্দ্র ভবন পরিচালন কমিটির আবেদন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। 


অন্যদিকে, জেলা তথা ও সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর থেকে রাজ্যের ২৩টি জেলার সরকারী ও বেসরকারী রবীন্দ্রভবনগুলির স্ট্যাটাস জানতে চাওয়া হয়েছিলো। সেই সময় বর্ধমান রবীন্দ্রভবনের অবস্থা জানিয়ে কি প্রয়োজন এবং অধিগ্রহণের প্রস্তাবও পাঠানো হয়। তবে এখনও কোনো উত্তর আসেনি। সম্প্রতি রবীন্দ্র ভবন সংস্কার এবং রবীন্দ্র ভবন পরিচালনার জন্য বরাদ্দ অর্থের জন্যও আবেদন পাঠানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন,রবীন্দ্রভবনকে সংস্কার ও আধুনিকীকরণ করা হলে তা ভাল হবে। তবে সরকারের কাছে এই ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্রভবন অধিগ্রহনের আবেদন জানানোর পর শহরবাসী মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});