

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: রাজ্যের মধ্যে প্রথম বর্ধমান শহরে চালু হওয়া সাধারণ এবং বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের দুপুরে পেটভর্তি মিলের ব্যবস্থা করতে চালুও হওয়া ১০ টাকায় মিল প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ল তীব্র আর্থিক সংকটে। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে এই প্রকল্প। এই ঘটনায় রীতিমত হতাশ অসংখ্য মানুষ – যাঁরা এই প্রকল্প থেকে প্রায় নিয়মিতই সুবিধা পেয়েছেন।
২০১৫ সালের মে দিবসের দিন তৎকালীন জেলাশাসক ড.সৌমিত্র মোহনের উদ্যোগে তৈরী হয় অন্নপূর্ণা ফাউণ্ডেশনের নামে এই প্রকল্প। প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে বর্ধমান পুরসভা তিনকোণিয়া বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় থাকা যাত্রী নিবাসের একাংশকেও এই কাজে ব্যবহার করার জন্য দেয়। শুরু হয় ১০ টাকায় দুপুরের নিরামিশ মিল। ভাত, ডাল, সব্জি, ছানার তরকারী, চাটনি থেকে পায়েস, মরশুমী ফসলের তরকারী সবই মিলত এই টাকায়। ড. সৌমিত্র মোহন জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে বর্ধমানের রাইস মিলারদের যুক্ত করা হয়। এমনকি সাধারণ বিত্তবানদের কাছে আবেদনও রাখা হয় – তাঁদের কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসাবে অনেকেই যাঁরা ভুরিভোজ করাতে চান তাঁরা এখানেই করুন।
প্রথম প্রথম এই কাজে ব্যাপক সাড়া মেলে। গড়ে প্রতিদিন ১০০০-১২০০ জন এই দুপুরের খাবারে অংশ নিত। সকাল সাড়ে নটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দেওয়া হত কুপন। কিন্তু আস্তে আস্তে আর্থিক সহযোগিতার অভাবে ধুঁকতে শুরু করে এই প্রকল্প। যদিও প্রাথমিক তথ্যে উঠে আসে যাঁরা রিক্সাচালক, যাঁরা দিনমজুরের, মুটে মজুরের কাজ করেন তাঁরা ছাড়াও বাইরে থেকে যাঁরা বর্ধমানে বিভিন্ন কাজে আসেন তাঁরাও এখানে নিয়মিত খাবার খেতেন।কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই প্রকল্প এখন আর্থিক সংকটে ভুগতে শুরু করেছে। এই প্রকল্পের কর্মী মানিক বিদ জানিয়েছেন, এখন মাত্র ১০০ জনকে খাওয়ানো হচ্ছে, তবে এখন আর সেভাবে সাহায্য মিলছে না।
বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য খোকন দাস জানিয়েছেন,আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। কতদিন আর লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসানে এই প্রকল্প চালানো যায়। তাই তাঁরা আগামী সপ্তাহেই একটি বৈঠক ডেকেছেন সমস্ত সদস্যদের নিয়ে। সেখানেই অন্নপূর্ণা ফাউণ্ডেশনের ভবিষ্যত সম্পর্কে আলোচনা হবে। তবে এভাবে লোকসানে আর চালানো সম্ভব নয়। অন্যদিকে, প্রাক্তন জেলাশাসক তথা এই প্রকল্পের পুরোধা ডা. সৌমিত্র মোহন জানিয়েছেন, যেহেতু তিনি আর বর্ধমানের দায়িত্বে নেই – তাই ঠিক কি ঘটছে সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তবে যাঁরা পরিচালনা করছেন তাঁরাই বলতে পারবেন প্রকল্পের ভবিষ্যত।