ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ ১০০ দিনের কাজে ভূয়ো জব কার্ড বাতিলের নির্দেশ সহ কর্মদিবস সৃষ্টিতে জোর না দিয়ে প্রকৃত চাহিদা সম্পন্ন মানুষকেই ১০০ দিনের কাজ দেবার নির্দেশ দিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী। জেলাশাসক জানিয়েছেন, বিগত দিনগুলিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা অন্যান্য জেলার তুলনায় কর্মদিবস সৃষ্টিতে রেকর্ড করেছে। একইসঙ্গে মাথা পিছু ব্যয়েও রেকর্ড করেছে। কিন্তু এটাই লক্ষ্য নয়। এবছর তাঁদের লক্ষ্য প্রকৃত মানুষকে কাজ দেওয়া এবং সম্পদ সৃষ্টি করা।
তিনি জানিয়েছেন, একইসঙ্গে ভূয়ো জবকার্ড দ্রুত বাতিল করে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জবকার্ডের জন্য আবেদন করেও পাননি তাঁদের জবকার্ড দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, দেখা গেছে, বহু মানুষ সরকারী সুযোগ সুবিধা পাবার জন্য জবকার্ড করিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তাঁরা কাজ করছেন না। আবার দেখা গেছে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে নতুন জবকার্ডের জন্য আবেদন করা হলেও তাঁদের সেই কার্ড দেওয়া হয়নি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট জব কার্ডধারীর সংখ্যা প্রায় ৯ লক্ষ। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের মধ্যে প্রথম পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রথম জুলাই মাস থেকে চালু হচ্ছে পরিষেবা সপ্তাহ। সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন এলাকায় শিবির করে এলাকার মানুষের সমস্যা শোনা এবং সম্ভব হলে সঙ্গে সঙ্গে তা নিষ্পত্তির জন্যই এই পরিষেবা সপ্তাহ চালু করা হচ্ছে। এরফলে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি সরকারী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পেতে পারবেন। তিনি জানিয়েছেন, কোন্ কোন্ পঞ্চায়েতে জবকার্ড নিয়েও কাজ করেনি তার হিসাব নিকাশ করে ভূয়ো কার্ড বাতিল করা হবে।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাটমানি নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেই অভিযোগে রয়েছে ১০০ দিনের কাজও। একই পুকুরকে দুবার কাটানো হয়েছে দেখিয়ে আবার কোথাও পুকুর না থাকলেও তা কাটানো হয়েছে দেখিয়ে টাকা নেওয়ার মত অভিযোগ সামনে এসেছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার এই দুর্নীতি রোধে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকদফা নয়া নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। সেক্ষেত্রে মাটির কাজ কম করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে সম্পদ সৃষ্টির ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে। বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নদী সংস্কারের ওপর।
জেলাশাসক জানিয়েছেন,তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলায় দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর সমস্ত সরকারী প্রকল্প ধরে ধরে খতিয়ে দেখেছেন। তাতে দেখা গেছে এই জেলার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত সরকারী প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে চুড়ান্ত অনীহা প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে 'অনিচ্ছা' কথাটি লেখা হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, কেন আনউইলিং তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। পঞ্চায়েত প্রধান কাজ না করতেই পারেন। তাহলে তিনি ছুটি নিন কিংবা দায়িত্ব ছাড়ুন। তাঁর ইচ্ছা বা অনিচ্ছার জন্য সাধারণ মা্নুষ কেন কাজ পাবেন না - এটা কখনই বরদাস্ত করা হবে না।
এব্যাপারে জেলার সমস্ত আধিকারিকদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিটি সরকারী দপ্তরের আধিকারিকদের সপ্তাহের প্রতি সোমবার গ্রিভেন্স বা অভিযোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি সোমবার সেই সমস্ত অভিযোগ গ্রহণ করার পর মঙ্গলবার তা পরীক্ষা করে দেখে বুধবারই তাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। জেলাশাসক জানিয়েছেন, এই কর্মসূচী ধারাবাহিকভাবেই চলবে।