Headlines
Loading...
বিমার টাকা হাতাতে যুবক খুন, প্রায় ৫ বছর পর যাবজ্জীবন

বিমার টাকা হাতাতে যুবক খুন, প্রায় ৫ বছর পর যাবজ্জীবন



ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনাঃ  মোটা অঙ্কের বিমার টাকা হাতাতে পরিকল্পিত ভাবে যুবককে হত্যা করে সেই মৃতদেহ নিজের বলে চালানোয় যাবজ্জীবন কারাদন্ড হল তিনজনের। ঘটনার প্রায় ৫ বছর পর সোমবার এই কারাদণ্ডের আদেশ দেন কালনা ফাস্ট ট্রাক আদালতের বিচারক বিবেকানন্দ সুর। সাজাপ্রাপ্ত দয়াল দাস মজুমদার, রুহিদাস মজুমদারের বাড়ি কাটোয়া থানার চর পাতাইহাট গ্রামে। অপর সাজাপ্রাপ্ত সুমন বিশ্বাসের বাড়ি নদীয়া জেলার ধানতলায়। মামলার একজন আসামি দেবজ্যোতি মজুমদার ফেরার। এই মামলায় ৩৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। 

মামলার সরকারি আইনজীবী অরূপ ভট্টাচার্য ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, দয়াল দাস মজুমদার ও তার ভাই রুহিদাস মজুমদার বীমা কোম্পানির টাকা হাতাতে বিরাট পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনার ছক অনুযায়ী দয়াল দাস কাটোয়ায় এলআইসিতে ২৫ লক্ষ টাকার একটি পলিসি করে। তার পরেই তারা সপরিবারে কাটোয়া থানার চর পাতাইহাট গ্রামের পাঠ চুকিয়ে দিয়ে হুগলি জেলার বলাগর থানার জিরাট অফিস পাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে ঘাঁটি গাড়ে। রেলের নকল কাগজপত্র দেখিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি করে যে দয়াল দাস যে কোন যুবকের রেলে চাকরি করিয়ে দিতে পারে। এই চাকরির প্রলোভনে পা দেয় সেই এলাকার যুবক অভিজিৎ দে (২৮)। 

গত ২০১৩ সালের ১৫ই মার্চ সন্ধ্যায় দয়াল দাস একটি মারুতি ভ্যানে অভিজিৎ দেকে চাপিয়ে চাকরির যোগাযোগ করিয়ে দেবে বলে বেরিয়ে পড়ে। তাদের সাথে যায় দয়াল দাসের ভাই রুহিদাস, ছেলে দেবজ্যোতি এবং ভাগ্না সুমন বিশ্বাস। তারা এসটিকেকে সড়ক ধরে কাটোয়ার দিকে রওনা দেয়। মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে সকলে বিয়ার পান করে। কিন্তু অভিজিতের বিয়ারের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দিয়ে তাকে অচৈতন্য করে লোহার রড দিয়ে হত্যা করে। অভিজিতের মৃতদেহ থেকে বস্ত্র খুলে নিয়ে দয়ালের পোশাক পরিয়ে দিয়ে পূর্বস্থলী থানার বিশ্বরম্ভা গ্রামের কাছে সড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হয়। মৃত যুবকের মুখটি আগুন দিয়ে এমন ভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হয় যে, যাতে তাকে কেউ চিনতে না পারে। পরের দিন অর্থাৎ ১৬ই মার্চ সকালে মৃতদেহটি স্থানীয় মানুষজনের নজরে এলে তারা পুলিশে খবর দেয়। 

পূর্বস্থলী থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রথমে কালনা মহকুমা হাসপাতাল পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত করায়। ময়নাতদন্ত করার সময় মৃতদেহের বুক পকেটে একটি ভোটার কার্ডের জেরক্স পাওয়া যায়। তার পিছনে লেখা ফোন নম্বরে পুলিশ ফোন করে রুহিদাসের সন্ধান মেলে। সে মর্গে গিয়ে মৃতদেহটি দাদা দয়াল দাসের বলে চিহ্নিত করতে গিয়ে ফেঁসে যায়। এরপর একে একে সকলেই গ্রেপ্তার হয়। প্রকাশ হয়ে যায় যে তারা বিমার টাকা হাতাতেই অভিজিৎ দে কে খুন করেছিল। আর সেই মৃতদেহ দয়াল দাসের বলেই চালানোর চেষ্টা হয়েছিল।কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});