ফোকাস বেঙ্গল ওয়েব ডেস্কঃ নিজেকে সুন্দরী করে তুলে ধরার জন্য সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নামার টান মেয়েদের ইদানিং অনেক বেড়ে গেছে। ফ্যাশনদুরস্ত আজকের সমাজে মেয়েদের যতই পণ্য হিসাবে দেখানোর চল বাড়ছে, মেয়েরাও ততই তার দিকে ঝুঁকছেন। আর এই দুর্বলতা কে কাজে লাগাতেই অনেক ঠগ ফাঁদ পেতে রেখেছে ভুবন জুড়ে। আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ঠগেদের শিকার হয়ে চলেছেন মেয়েরা। বহু মেয়ে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে ভুয়ো সংস্থা গুলির কবলে পড়ে ইতিমধ্যেই অনেকে প্রতারিত হয়েছেন। অনেক মেয়ে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার ভুয়ো আয়োজকদের পাল্লায় পড়ে চিহ্নিত হন। এরপর তাদের দেহ ব্যাবসায় ব্যাবহার করতে জাল পাতেন আয়োজকরা। কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা। তবু কিশোরী ও সদ্য যুবতীরা নিজেদের তুলে ধরার মোহেই আগুনে ঝাঁপ দেওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। আর ভুয়ো আয়োজক সংস্থাগুলি এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে রোজগার করে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মত, এ থেকে বাঁচতে হলে সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজকদের বাছা খুব জরুরি। বাইরের চাকচিক্যে কিম্বা সেই সমস্ত সংস্থার কর্তাদের কথায় না ভুলে আয়োজক সংস্থা সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জেনে এগোনো উচিত।
এ ব্যাপারে মিস ইন্ডিয়া অর্গানাইজেশনের ব্র্যান্ড ও অপারেশন বিভাগের প্রধান নাতাশা গ্রোভারের অভিমত হল, 'খতিয়ে দেখে নেওয়া দরকার ব্র্যান্ডটি সম্পর্কে বিশদ তথ্য। এর আগে সংস্থার আয়োজিত প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হয়েছেন,তাঁদের সম্পর্কে তথ্য যাচাই করে দেখে নেওয়া ভাল। সংস্থার মিডিয়া পরিকল্পনা থেকে শুরু করে প্রতিযোগিতায় বিজয়িনী হলে এরপর তাকে কি ধরনের কাজ করতে হবে, সে সম্পর্কে তথ্য খতিয়ে নেওয়া দরকার।'
এমপ্রেস ইউনিভার্স নামে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আর একটি আয়োজক সংস্থা বলছে, ' ভুয়ো যে সংস্থা গুলি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে, তাদের সচরাচর বৈধ কোনও রেজিস্ট্রেশন থাকে না। এক্ষেত্রে সাবধানতা হিসাবে দেখে নেওয়া দরকার সংস্থাটির আইনানুগ রেজিস্ট্রেশন আছে কিনা। যদি সংস্থাটির আইনানুগ রেজিস্ট্রেশন থাকে, তাহলে মোটের ওপর ভরসা করা যেতে পারে।'
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার যথার্থ আয়োজকরা প্রত্যেকেই বলেন, ভুয়ো সংস্থার কবলে যেন পড়তে না হয়। এই জন্য মেয়েদের প্রতিযোগিতার আয়োজক সংস্থার অফিস সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া উচিত। যাচাই করে নেওয়া উচিত সংস্থাটির আদৌ বৈধ ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে কিনা। তাছাড়া ভুয়ো সংস্থাগুলি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী মেয়েদের কাছ থেকে নানা অছিলায় অনবরত টাকা আদায় করে থাকে। প্রশিক্ষণ, মেক আপ, গ্রুমিং, অডিশন ফী ইত্যাদি খাতে প্রতিযোগিতায় নাম লেখানো মেয়েদের কাছ থেকে ওইসব ভুয়ো সংস্থা ধাপে ধাপে টাকা আদায় করে থাকে।
এক দিকে আছে নানান ফিকিরে টাকা আদায়ের চক্কর, আর অন্যদিকে আরো বড় তালেবররা নারী শরীরকে বিকনোর নানান ছক সাজিয়ে টোপ দেন। দৈহিক ও মানসিক সৌন্দর্যের বিকাশই যদি এই ধরনের প্রতিযোগিতার মুল উদ্দেশ্য হয়, তবে তাকে উৎসাহিত করা উচিত। আর সেই ধরনের প্রতিযোগিতায় নামলে নিজের গুনেরও বিকাশ হয়। কিন্তু পা পিছলে ঠগেদের পাল্লায় পড়লে শেষমেশ মানসিক অবসাদে রসাতলে যেতে হবে। শরীর নিয়ে যাদের শুচিবায়ু নেই্, সেই অত্যাধুনিক মেয়েদেরও কিন্তু মানসিক অবসাদে আত্মহত্যার পরিমাণ ও প্রবণতা বাড়ছে। জীবন একটাই। লোভের টোপে পড়ে তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবেন না। লোভের ফাঁদ পাতা ভুবন জুড়ে। একটু বুঝে শুনে পা ফেলুন।
ক্রমশ