পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ সাজাপ্রাপ্ত কয়েক জন বন্দীদের নিয়ে এবার বীরভূমের সিউড়ি সংশোধোনাগারে শুরু হল মেশিনে মুড়ি ভাজার প্রকল্প। এবার এখান থেকেই বন্দিদের খাবার জন্য মুড়ির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উৎপাদিত সেই মুড়ি জেলা ও ভিন জেলার সংশোধোনাগারেও পাঠানো হবে। সিউড়ি সদর সংশোধোনাগারের বাইরে স্টল করেও সেই মুড়ি বিক্রি করা হবে বলে কত্রিপক্ষ জানিয়েছে।
প্রায় দুই শতাব্দী প্রাচীন বীরভূমের সিউড়ি জেলা সংশোধোনাগার। এখন এই সংশোধোনাগারে ৫১৫ জন মোট বন্দী রয়েছে। তার মধ্যে ৪৭ জন মেয়াদী সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ১০৪ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং ৩০ জন মহিলা বন্দি রয়েছেন। এই সমস্ত বন্দিদের সকালে বা বিকেলে টিফিনে চিড়ে বা রুটি দেওয়া হতো এতদিন। কিন্তু বেশীর ভাগ বন্দি সেই খাবারের বদলে মুড়ির দাবি করে আসছিল বলে সংশোধোনাগার সুত্রে জানা গিয়েছে। সেই দাবি থেকে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সরকারের কাছে মুড়ি ভাজার মেসিন বসানোর প্রস্তাব পাঠায়। সেই প্রস্তাব মঞ্জুরও হয়। গত বছর ডিসেম্ববর মাসে ৭০ হাজার টাকা খরচে সেই মেশিন বসানো হয়। অবশেষে শুক্রবার থেকে মেশিন থেকে মুড়ি ভাজার কাজ শুরু হয়ে গেল সংশোধোনাগারে।
ইতিমধেই রাজ্যের পূর্ব মেদনীপুর,বহরমপুর এবং প্রেসিডেন্সি এই তিন কেন্দ্রীয় সংশোধোনাগারে মুড়ি ভাজার মেশিন আছে। যেখান থেকে তাঁদের নিজেদের খাদ্য চাহিদা পুরন হয়ে থাকে। রাজ্যের জেলা সংশোধোনাগার গুলির মধ্যে সিউড়িতেই প্রথম বসানো হল মুড়ি ভাজার মেশিন। সংশোধনাগারের চারজন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে মুড়ি ভাজা কাজ করছেন। এই বন্দিরা হলেন, নানুরের কঙ্কা হাসদা ,বোলপুরের সোম হাসদা ,আমোদপুর এর মিহির কাঠুরিয়া এবং ময়ূরেশ্বর এর মনসা মুর্মু ।
উল্লেখ্য, বীরভূমের সিউড়ি সংশোধনাগার রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন সংশোধোনাগার। ইংরেজ আমলে যার নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৮১৪ সালে। ১৮২০ সালে তার পুর্নাঙ্গ রুপ পায়। বীরভূমের সিউড়ি জেলা
সংশোধোনাগারের জেলার আব্দুল্লাহ কামাল জানান, আমাদের খাদ্যাভাসে অন্যতম খাবার হল মুড়ি। সংশোধোনাগারে চিড়ে বা রুটি দেওয়া হলেও বেশী ভাগ বন্দি সেটা খেতে পছন্দ করেন না। তারা মুড়িই চায়। কিন্তু প্রতিদিন প্রয়োজনীয় মুড়ি বাইরে থেকে ব্যবস্থা করা খুব কঠিন কাজ। তাই তারা ঠিক করেন নিজেদের খাবার মুড়ি নিজেরাই ভাজবে বন্দিরা। সেখান থেকে তাঁদের খাওয়ার পর উদ্বৃত্ত মুড়ি জেলার রামপুরহাট ও বোলপুর মহকুমা সংশোধোনাগারে পাঠানো হবে। রাজ্যের অন্য জেলার সংশোধোনাগারে বিক্রি করা হবে। পাশাপাশি এই সংশোধোনাগারের মূল গেটের কাছে একটি স্টল করে বিক্রিও করা হবে এই মুড়ি।