
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,গলসীঃ কলেজে কলা বিভাগ থাকলেও বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ নেই। তাই ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার অসুবিধার কথা ভেবে কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষী বিষয়টি জানিয়ে সরাসরি ট্যুইট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। ঘটনাটা পূর্ব বর্ধমানের গলসী কলেজের। আর এই খবর জানাজানি হতেই আলোড়ন পরে যায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। সোমবার অঞ্জনবাবুর সমর্থনে আর নিজেদের স্বার্থে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমে একই দাবী জানিয়ে আন্দলন শুরু করলেন।আর এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে জেলা জুড়ে।
কলেজের নিরাপত্তারক্ষী অঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে গলসী কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু এখনও কলা বিভাগ ছাড়া অন্য কোনো বিভাগ সেখানে চালু করা হয়নি। অথচ গলসী ১ ও ২নং ব্লকের প্রায় ৩০০-রও বেশি গ্রামের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জায়গা এই গলসী কলেজ। আর এই সমস্ত ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। অঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতে গিয়েই তিনি ছেলেমেয়েদের কথাবার্তা শুনেছেন। অনেকেরই খুব ভাল মার্কস রয়েছে। কিন্তু দূরত্ব এবং আর্থিক কারণে তাঁরা তাঁদের পছন্দমত বিভাগে পড়াশোনা করতে পারছে না।
অঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারেও এই কলেজে ছাত্রছাত্রীদের অভিমত নিয়েই চালু করা হোক অন্যান্য বিভাগ। তা নাহলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের প্রায় ২০ কিমি দূরে গিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। আর তাই গত ২ বছর ধরে গার্ডের কাজ করতে গিয়ে বারবার ছেলেমেয়েদের কাছে এই আক্ষেপ শুনে তাঁর খারাপ লেগেছে। আর সেই কারণেই তিনি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন। অঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে অন্তত ৪ বার তিনি মেইলে আবেদন পাঠিয়েছেন। এছাড়াও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং উচ্চশিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও তিনি একই আবেদন পাঠিয়েছেন। কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি ট্যুইটও করেছেন এই দাবী নিয়ে।
অঞ্জনবাবুর আবেদন,এলাকার ছেলেমেয়েদের উজ্জ্বল শিক্ষার জন্য এগিয়ে আসুক সরকার। দ্রুত এই গলসী কলেজে চালু হোক কলা বিভাগ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগ। এদিকে, সোমবার সকালে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এই একই দাবীতে রাস্তায় নামে। কলেজের ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে, তারা ভাল মার্কস পেলেও কেবলমাত্র দূরত্বের কারণে তারা নিজেদের পছন্দমত কোর্সে পড়তে না পেরে বাধ্য হচ্ছে কলা বিভাগেই পড়াশোনা করতে। তারা এদিন জানিয়েছে, তারা গলসী কলেজে বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ চালুর দাবীতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
অন্যদিকে, এব্যাপারে এদিন কলেজের অধ্যক্ষ কুমারেশ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের দাবী যথেষ্টই ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু এই দাবী জানানোর একটি পদ্ধতি আছে। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে তাঁকে এব্যাপারে কোনো কিছুই জা্নানো হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে এব্যাপারে লিখিত জানালে তিনি তা কলেজের পরিচালন সমিতিতে আলোচনায় তুলবেন।
