পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ"তপন স্যার আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না।" গতকাল পরীক্ষা বয়কট করে, ব্যানার লিখে, অফিস ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রিয় স্যারের মিউচুয়াল ট্র্যান্সফার আটকাল দুবরাজপুরের মেটেলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। দুবরাজপুর স্কুলের ইংরাজির শিক্ষক তপন কুমার দাস। স্কুল পরিদর্শক দপ্তরে অন্য এক শিক্ষকের সঙ্গে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়। কিন্তু, তপনবাবুকে স্কুল থেকে যেতে দিতে নারাজ পড়ুয়ারা। কারণ, স্যারের প্রতি তাদের ভালোবাসা।
বর্ধমান জেলার গলসির বাসিন্দা তপন কুমার দাস। নিত্যদিন প্রায় ৮৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসেন। তাই স্কুল পরিদর্শক দপ্তরে অন্য এক শিক্ষকের সঙ্গে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন যথারীতি মঞ্জুরও হয়। কিন্তু, তপনবাবুকে স্কুল থেকে যেতে দিতে চায় না পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা বলছে, অভিভাবকের মতো স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে পড়ান তাদের স্যার। তার জন্যই আজ স্কুল এই জায়গায়। তাই যতদিন তিনি থাকার প্রতিশ্রুতি না দিচ্ছেন ততদিন এই আন্দোলন চলবে।
শিক্ষক তপনবাবুকে ঘিরে ধরে কান্নাকাটিও করে কয়েকজন ছাত্রী। অবশেষে, ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে তপনবাবুকে থাকার জন্য আবেদন জানালেন পরিচালন সমিতির সদস্যরাও। যদিও, তপনবাবু পড়ুয়াদের বোঝান, তাঁর যাতায়াত করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই তিনি স্বেচ্ছায় সরকারি নিয়মে চলে যাচ্ছেন।
তপনবাবু বলেন, "ওরা আমাকে খুব ভালোবাসে, তাই আবেগে এই রকম করছে। ছাত্রদের এই সাময়িক আবেগ কিছুদিন পরেই কেটে যাবে। আমি এর আগেও একবার আবেদন করেছিলাম, তখন পরিচালন সমিতির অনুরোধে যাইনি। যদি আমাকে আটকানোর ইচ্ছে ছিল তাহলে আগে থেকেই জানানো উচিত ছিল। আবার আবেদন বাতিল করা সম্ভব নয়।"
কিন্তু শিক্ষকের এই কথা মানতে নারাজ পড়ুয়ারা। তাই ব্যানার হাতে চলছে বিক্ষোভ "স্যার তোমায় আমরা ছাড়ব না", "স্যারের বদলি না আটকালে আমরা পরীক্ষা দেব না। শেষমেষ প্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের আবেগ তপনবাবুকে আদৌ এই স্কুলেই আটকে রাখতে পারে কিনা তা সময়ই বলবে।