সৌরীশ দে,বর্ধমান: দোল উৎসবে কেমিকেল রং আর আবিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বরাবরই ছিল। কারণ এতে চামড়ায় এলার্জি সহ নানারকমের সমস্যা দেখা দেয়। এবার সেই ক্ষোভের প্রশমন ঘটাতে বর্ধমানের বাজারে আবির্ভাব ঘটল ভেষজ আবিরের। সাদা রঙের এই আবির ইতিমধ্যেই জমিয়ে ফেলেছে দোলের বাজারও।
দেশের সর্বত্রই রাত পোহালেই রঙের উৎসব। যদিও বর্ধমানের বাসিন্দাদের হোলির রঙ মাখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও একটি দিন। কারণ বর্ধমানের রাজার চালু করা প্রথা অনুযায়ী বর্ধমানে দোল উৎসব পালিত হয় পূর্ণিমার পরের দিন। কিন্তু তাতে কি। উৎসবের বাজার তো আর বসে থাকবেনা। তাই আগে থেকেই উৎসবের উপকরণ রেডি করে নিতে শহরের বাজারে ঢল নেমেছে মানুষের।পিচকারি থেকে রং, আবির, মুখোশ, টুপি সবই কেনার ধূম। প্রতি বছরই লাল,নীল হলুদ,সবুজ গোলাপী প্রভৃতি নানা রঙের আবিরের বস্তা সাজানো থাকে দোকানে দোকানে। কিন্তু এবার এত রঙের মাঝে সাদা আবিরের উপস্থিতি যেন স্বস্তি দিচ্ছে আমজনতাকে। রঙের উৎসবে রঙীন নয়, বরং সাদা আবিরের ওপরেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে ক্রেতারা। কিনে নিচ্ছে যার যতটা প্রয়োজন।
কিন্তু রংয়ের উৎসবে কেন এত সাদার চাহিদা ?
পূর্ব বর্ধমান জেলার হোলসেল মার্কেটের এক বিক্রেতা জানালেন, আসলে সাদা আবির হল ভেষজ। সেই কারণে সবাই এই আবিরের দিকেই ঝুঁকছেন। অথচ সাদা আবিরের দাম অন্যান্য আবিরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। যেখানে রঙীন আবিরের দাম কেজি প্রতি ৮০ টাকা , সেখানে সাদা আবির ২০০ টাকা কেজি হওয়া সত্ত্বেও লোকে খুশি মনে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আসলে এই আবির মাখলে গায়ে কোনো চর্ম রোগ হবার ভয় নেই।
ছোট দোকানিরা জানাচ্ছেন ,বেশ ভয়ে ভয়েই সাদা আবির রেখেছিলাম দোকানে। ভেবে ছিলাম প্রথমবার তো। কেমন বিক্রি হবে কে জানে। কিন্তু এখন দেখছি এই আবিরের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।
শহরের খোসবাগানের বাসিন্দা দেবব্রত চ্যাটার্জ্জী সাদা ভেষজ আবির দেখামাত্রই স্থির করে নিলেন নাতি-নাতনিদের জন্য এটাই নিয়ে যাবেন। আরেক ক্রেতা সুমিতা ভট্টাচার্যও জানালেন বাচ্চাদের জন্য কেমিকেল রং বা আবির নয়, ভেষজ রং আর আবিরই নেওয়া উচিত।
সাদা আবিরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে রং আর পিচকারির বিকিকিনি। ক্রেতারা জানাচ্ছেন রং-পিচকারি-সবেরই দাম আগের বারের চেয়ে বেশি। কেমিক্যাল রং ৮টাকা ভরি (১০ গ্রাম) ,তবু বছরের একটা দিন, রঙের উৎসব থেকে বঞ্চিত হতে চান না কেউই। তাই দাম দিয়েও নিয়ে যাচ্ছেন খুশির উপকরণ।