Headlines
Loading...
অর্থের অভাবে বন্ধ চিকিৎসা, বেঁচে থাকার ইচ্ছায় সাহায্যের কাতর আর্জি বিলাসীর

অর্থের অভাবে বন্ধ চিকিৎসা, বেঁচে থাকার ইচ্ছায় সাহায্যের কাতর আর্জি বিলাসীর

পল মৈত্র,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ পরিবারে রোজগার বলতে কিছুই নেই। তাই টাকার বড়ই অভাব। এই অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে কষ্টে দিন কাটছে বছর ১৫-র বিলাসী বর্মণের। এই অল্প বয়সেই হারিয়েছে হাঁটাচলা করার শক্তি। চলাফেরা করতে হয় অন্যের সাহায্য নিয়ে। তাই সুস্থ হতে সবার কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে বিলাসী।
বিলাসী খাদিমপুর গার্লস হাইস্কুলে ক্লাস নাইনের ছাত্রী। অসুস্থতার কারণে স্কুলে যেতে পারে না। বছর তিনেক আগেও শিবরামপুর গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে আসত। হঠাৎ ছন্দপতন হয়। কিছু দিন আগে মা সকালী বর্মণের প্রাণ কেড়ে নেয় ক্যানসার। ছোটো বোন কখনও বাবা আবার কখনও দিদিমার কাছে থাকে। বাবা বিনয় বর্মণ পেশায় দিনমজুর। তাঁরও মাথার ঠিক নেই। এই অবস্থায় দিদিমা সান্ত্বনা বর্মণই একমাত্র সম্বল। কিন্তু, তাঁরও তেমন রোগজার নেই। তাই প্রশ্ন উঠেছে বিলাসীর ভবিষ্যৎ নিয়ে।
শিবরামপুর গ্রাম থেকে বিলাসীকে গোপীনগরে নিজের কাছে নিয়ে আসেন দিদিমা। এরপর হঠাৎ জ্বর হয় বিলাসীর। তারপর থেকেই ক্রমশ ফুলতে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন গাঁট। সঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণা। দিন দিন শুকিয়ে যেতে থাকে সে। প্রথমে বালুরঘাট হাসপাতাল। পরে একাধিকবার প্রাইভেট চেম্বারে দেখিয়েও কোনও লাভ হয়নি। চিকিৎসকরা তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যেতে বলেন। মালদায় বিভিন্ন পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা ওষুধ দেন। কিন্তু, কী রোগ হয়েছে তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানে না পরিবার। দিদিমা জানান, চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁর শেষ সম্বলও বিক্রি করেছেন। আর অবশিষ্ট কিছু নেই। এখন গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে মাসে ৬০০-৭০০ টাকার ব্যথা কমানোর ওষুধ কিনতে হয়। হাতে পায়ের যন্ত্রণায় বিলাসী যখন কাতরায় তখনই তাঁকে দেওয়া হয় যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ। চিকিৎসা বলতে এইটুকুই। এর বেশি কিছু করতে পারে না তার পরিবার। যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ কিনতে দিদিমা মুড়ি ভাজেন। সেই মুড়ি বাজারে বিক্রি করে যে লাভ হয় তা দিয়েই কোনওক্রমে নাতনিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিলাসী চায় আগের মতোই তার বান্ধবীদের সঙ্গে খেলতে। চায় পড়াশোনা করতে। আবার আগের জীবন ফিরে পেতে ইচ্ছে করে। যদিও সে জানে, এটা সম্ভব নয়। কারণ, টাকার অভাবে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার চিকিৎসা। এই প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে সুদিন যে জীবনে আর আসবে তা ভাবতে ভুলে গেছে। এখন অসুস্থ শরীরটাকে টেনে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যেতে সাহায্য নিতে হয় লাঠির। অন্যের সাহায্য ছাড়া হাঁটাচলা করাও অসম্ভব তার পক্ষে। শুধু জানে যদি কেউ সাহায্যের হাত বাড়ায়, যদি তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা হয়, তবেই সে ফিরে পেতে পারে স্বাভাবিক জীবন। তা না হলে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া তার অন্য কোনও পথ নেই।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});