পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুরঃআনুষ্ঠানিক ভাবে শনিবার উদ্বোধন হল বুনিয়াদপুর পুরসভার নিজস্ব স্থায়ী ভবন। আড়াই মাস আগে বোর্ড গঠন ও চেয়ারম্যান মনোনীত হলেও পুরসভার কাজকর্ম চলত গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনেই। বংশীহারি ব্লকের বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় থাকা শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়টিকে নূতন রূপে সাজিয়ে পুরসভার স্থায়ী ভবন করা হয়। এই ভবনের উদ্বোধনে এদিন উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাট লোকসভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ, জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বীবেদি, পুলিশ সুপার প্রসূন ব্যানার্জী, পুরসভার চেয়ারম্যান অখিল বর্মন সহ অন্যান্যরা। সেখানে প্রদীপ প্রজ্বলনের পর ফিতে কেটে তিনতলা ভবনের উদ্বোধন করেন জেলা শাসক।
জানা গেছে, বুনিয়াদপুর পুরসভার একেবারে নীচে থাকছে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং পুর প্রশাসকের কার্যালয়। পরের তালায় চলবে পুরভার কাজকর্ম। সেখানে পাশাপাশিভাবে রয়েছে কাউন্সিলারদের কার্যালয়। শেষ তলায় থাকছে মিটিং হল। স্থায়ী নিজস্ব ভবন হওয়াতে এবার নাগরিক পরিষেবার উন্নতি হবে বলে মনে করছেন বুনিয়াদপুরের বাসিন্দারা।
সাংসদ অর্পিতা ঘোষ জানান, প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্লব মিত্র এই এলাকাকে পুরসভা হিসেবে গঠন করতে উদ্যোগী ছিলেন। তিনিই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন। মূখ্যমন্ত্রী এলাকার মানুষের দাবীকে প্রাধান্য দিয়ে বুনিয়াদপুরকে পুরসভা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তিতে এই এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব ছিল তার উপর। বুনিয়াদপুরের থেকে অনেক বেশি জনবহুল এলাকা রয়েছে রাজ্যে। কিন্তু তারপরেও এই এলাকাকে পুরসভা করা হল যা খুবই আনন্দের বিষয়। তবে পুরসভা বলতে আগেই আলোয় মোড়া এলাকা বোঝায়। সেই কারনে প্রথমে সমস্ত এলাকায় যাতে আলোর ব্যবস্থা হয় তা নজরে রাখা হবে। এছাড়া নাগরিক পরিষেবায়, নিকাশি, পানীয় জল সহ একাধিক বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে পুর বোর্ডকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মূখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন বুনিয়াদপুরকে পুরসভা হিসেবে। বংশীহারির শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি এলাকাকে নিয়ে ১৪ টি ওয়ার্ড গঠন করা হয়। নির্বাচন না হওয়াতে পুরসভার কাজকর্ম হত মহকুমা শাসকের ত্বত্তাবধানে। অবশেষে চলতি বছরের আগস্ট মাসে রাজ্যের অনান্য পুরসভার সংগে নির্বাচন হয় এই পুরসভার। সেখানে ১৩ টি আসন তৃণমূল এবং ১ টি বিজেপি দখল করে। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। ১৩ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হন অখিল বর্মন। বোর্ড গঠন সহ পুরসভা অনান্য প্রক্রিয়া সম্পূর্ন হলেও ছিলনা কোন নিজস্ব ভবন। শহরের মধ্যে থাকা শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকেই অস্থায়ী ভাবে কাজ হতে থাকে পুরসভার। স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যা দেখা দেয় পুরসভার ও গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজকর্মে। এতে নাগরিক পরিষেবাও বিঘ্নিত হতে থাকে। ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল মানুষের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত সেই সমস্যা মেটে। শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়টির ভবনকেই হস্তান্তর করা হয় পুরসভাকে। বিল্ডিংটিতে মেরামত করে নূতন ভাবে সাজিয়ে গড়া হয় বুনিয়াদপুর পুরসভার নিজস্ব ভবন।
চিত্র - ফাইল
চিত্র - ফাইল