Headlines
Loading...
রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের ভয়াবহ দুর্নীতি ফাঁস করল অ্যাবেকা।

রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের ভয়াবহ দুর্নীতি ফাঁস করল অ্যাবেকা।


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান:
রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের ভয়াবহ দুর্নীতি ফাঁস করল অ্যাবেকা। অ্যাবেকার বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক সুব্রত বিশ্বাস জানান, সম্প্রতি বর্ধমান শহর সংলগ্ন হরিনারায়ণপুর ১নং সজলধারা প্রকল্পে বিল পাঠানো হয় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১৩ হাজার ১০১ টাকা। নির্দিষ্ট সময়ের পরে দিলে তা দিতে হত ১৯ হাজার ১৮০ টাকা। এই অসঙ্গতিপূর্ণ বিলের ব্যাপারে ওই প্রকল্পের সম্পাদক সুদীপ কুমার মণ্ডল রিজিওনাল গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আর মজার বিষয় এই অভিযোগ জানানোর পরই নির্দিষ্ট সময়ের পরে যে ১৯ হাজার ১৮০ টাকা দেবার কথা ছিল তার পরিবর্তে রাতারাতি তা কমিয়ে বলা হয় ১৬ হাজার ৭০৫ টাকা দিতে। কিন্তু বিদ্যুত দপ্তরের এই ঘটনার পিছনে যে ভয়াবহ দুর্নীতি রয়েছে অল বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি কনসিউমারস্ এ্যাসোসিয়েশন বা সংক্ষেপে অ্যাবেকা তাই প্রকাশ্যে নিয়ে এল। আর এরপরই রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, এরপরই বিদ্যুত সংযোগ অবিচ্ছিন্ন রাখতে বাধ্য হয়েই ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়া হলেও ট্যারিফ রেগুলেশনের কোন্ ধারা মেনে এই বর্ধিত বিল নেওয়া হল তা তাঁরা জানতে চান। সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, আরও মজার বিষয় হল, এব্যাপারে খোদ এ্যাসিস্ট্যাণ্ট ইঞ্জিনিয়ার জানান, নির্দিষ্ট সময়ের পরে বিল দেওয়া হলে তা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ট্যারিফ অনুযায়ীই নেওয়া হয়। যদিও এব্যাপারে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এরপরই অ্যাবেকার পক্ষ থেকে ওমবাড্সম্যানে আপিল করা হয়। আর সেখানেই বিচারপতি আশীষ কুমার ঠাকুর এভাবে বর্ধিত বিদ্যুত গ্রহণকে সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানিয়ে দেন। একইসঙ্গে ওই জলপ্রকল্পের জন্য যে বর্ধিত বিল নেওয়া হয়েছে তা পরবর্তী বিলের সঙ্গে ঠিক করে দেবারও নির্দেশ দেন। 
সুব্রতবাবু জানান, এটি হিমশৈলের চুড়ো মাত্র। ঘটনাটি জেনে যাওয়ায় তাঁরা প্রতিবাদ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু প্রতিদিনই কত গ্রাহককে এভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে তার কোনো হিসাব নেই। তিনি জানান, অ্যাবেকার পক্ষ থেকে এব্যাপারে আরটিআই করে গত ৫ বছরে এই ধরণের বিল কি পরিমাণ নেওয়া হয়েছে এবং এই বর্ধিত টাকা কোথায় যাচ্ছে তা জানতে চাওয়া হবে। একইসঙ্গে এব্যাপার তাঁরা আন্দোলনেও নামতে চলেছেন। 

উল্লেখ্য,নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে টেলিফোন কিংবা বিদ্যুতের বিল না দিলে দুটি দপ্তরের পক্ষ থেকেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবার জন্য কিংবা বিদ্যুতের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের জন্য কার্যত মুখিয়েই থাকে কর্তৃপক্ষ। যদিও বর্তমান সময়ে হাতে হাতে মোবাইল ফোন হয়ে যাওয়ায় এবং এখন বিশেষত টেলিফোনের ল্যাণ্ড লাইনের গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়ায় টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা তেমন আর শোনা যায় না। কিন্তু অপরিহার্য বিদ্যুতের ক্ষেত্রে কোথাও না কোথাও এই হুমকি শুনতেই হয় গ্রাহকদের।
সুব্রত বাবু জানিয়েছেন, বিচারক জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল প্রদান করলে যে ছাড়ের সুযোগ দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সময়ের পরে তা দিলে সেই ছাড় যেমন পাওয়া যাবে না, তেমনই ওই ছাড়ের টাকাটাই মাত্র জরিমানা হিসাবে নেওয়া যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কোটি কোটি টাকা প্রতিবছরই জনসাধারণের পকেট কেটে বার করে নেওয়া হচ্ছে। কেবলমাত্র সঠিকভাবে না জানা এবং প্রতিবাদ না করার জন্যই বিদ্যুত দপ্তর লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি দপ্তরের নিচের তলার আধিকারিক থেকে একেবারে উর্ধতন আধিকারিকরাও নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করেই একতরফা এই জরিমানা নিয়ে চলেছেন। সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, অ্যাবেকার পক্ষ থেকে হরিনারায়ণপুর জলপ্রকল্পের এই ঘটনাকেই হাতিয়ার করে শীঘ্রই আন্দোলনে নামতে চলেছেন।



(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});