Headlines
Loading...
বর্ধমানে ফের নাকি খুলতে চলেছে প্রণবানন্দ,আশায় আর আতঙ্কে আমানতকারীরা।

বর্ধমানে ফের নাকি খুলতে চলেছে প্রণবানন্দ,আশায় আর আতঙ্কে আমানতকারীরা।



ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: আমানতকারীদের জমা রাখা কয়েক কোটি টাকা ফেরত দিতে না পের প্রায় ২১ বছর আগে যে প্রণবানন্দ সমবায় ব্যাংক পাততাড়ি গুটিয়ে নিয়ে ছিল সেই প্রণবানন্দ নাম পরিবর্তন করে ফের চালু হওয়ার খবরে আলোড়ন পরে গেছে বর্ধমান শহরে। রীতিমতো বোর্ড লাগিয়ে,বিজ্ঞপ্তি জারি করে শহরের খোসবাগান এলাকায় লিক্যুইডেশনে চলে যাওয়া এই ব্যাঙ্ক সমবায় সমিতির ব্যানারে  আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ফের নাকি খুলতে চলেছে।রবিবার  সমিতির ফের চালুর উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা বোর্ডে জানানো হয়েছে, সমবায় মন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় ফের খোলা হচ্ছে সমিতি। যদিও প্রণবানন্দ সমবায় ফের চালু হওয়া নিয়ে পুরো অন্ধকারে রাজ্যের সমবায় দফতর।

খোদ রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় শনিবার জানিয়েছেন, এই প্রণবানন্দ সমবায় সমিতির কোনো অনুমোদন দপ্তর থেকে দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন প্রয়োজনে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।  তিনি এও জানিয়েছেন,এই সমবায়ের আপিলের ভিত্তিতে যাবতীয় ফাইল সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভেরিফিকেশনের জন্য পাঠানো হয়েছিল,কাগজপত্রে অসঙ্গতি থাকায় অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। 

সমবায় দফতরের ওয়েস্টার্ন জোনের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার অজয় কুমার রাম বলেন, প্রণবানন্দ সমবায় ফের খুলছে আমার জানা নেই। এর আগে জাল নথিপত্র পেশ করে সমিতি খোলা নিয়ে কেস হয়েছে বলে জানি। ফের সমিতি খোলার ব্যাপারে কোনও নির্দেশ আমি পাইনি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব। কেউ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সমবায় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমানতকারীদের জমা রাখা কয়েক কোটি টাকা ফেরত দিতে না পেরে ১৯৯৬ সালে রাতারাতি পাততাড়ি গুটিয়ে নিয়েছিল প্রণবানন্দ সমবায় ব্যাঙ্ক। মাথায় হাত পড়ে যায় কয়েক হাজার আমানতকারীদের। সমস্যায় পড়ে যান সংস্থার কর্মীরাও। অভিযোগের তদন্তে নামে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সমবায় দফতরও পৃথক তদন্ত চালায়। দুই তদন্তে আর্থিক অনিয়ম উঠে আসে। জেলার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ জমা পড়ে। গ্রেফতার হন ব্যাঙ্কের সেক্রেটারি কাম চিফ এক্সিকিউটিভ ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েক জন। রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখা অভিযোগের তদন্ত করে চার্জশিট পেশ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। সেই মামলাগুলি এখনও বিচারাধীন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক লাইসেন্স বাতিল করে। ব্যাঙ্কটি লিক্যুইডেশনে পাঠায় সমবায় দফতর।সেই মামলা মিটতে না মিটতে ২০১২ সালে কয়েকজন মিলে ফের ব্যাঙ্কটি চালু করেন।তখন ব্যাঙ্ক বদল করে করা হয় সমিতি। চালুও হয়। কয়কজনকে জমা আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্যে চেকও দেওয়া হয়।  

প্রণবানন্দ চালু করা নিয়ে তদন্ত হতেই উঠে আসে ভয়ঙ্কর তথ্য। তাতে দেখা যায়, সমবায় দফতরের যে অনুমতি দেখিয়ে সমিতি চালু করা হয়েছিল সেটি জাল। ফের গ্রেফতার হন সমিতির কর্তা ভাস্কর বাবু ও সমবায় দফতরের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মী।

আবার সেই প্রণবানন্দ সমবায় চালুর কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শহরের বেশ কিছু আমানতকারী। তারা জয়েন্ট রেজিস্ট্রারকে চিঠি লিখে সমিতি ফের চালু করা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা চায় কেউ যেন আর প্রতারণার শিকার না হন। 

যদিও প্রণাবনন্দ সমবায় চালুর করার বিষয়ে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি সংস্থার কর্তাদের কাছে। রবিবার দুপুরে সংস্থার পুরোনো অফিসে আধিকারিক,কর্মীদের নিয়ে একটি সেমিনারের অয়োজন করা হয়েছে বলে জানতে পারা গেছে। 


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});