Headlines
Loading...
পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনার বলি মোট ৫, জেল সুপার থেকে বিধায়কের দেহরক্ষী করোনা আক্রান্ত, বাড়ছে আতঙ্ক

পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনার বলি মোট ৫, জেল সুপার থেকে বিধায়কের দেহরক্ষী করোনা আক্রান্ত, বাড়ছে আতঙ্ক


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: মঙ্গলবার রাতেই জেলাশাসক বিজয় ভারতী ঘোষণা করে দিয়েছিলেন ক্রমবর্ধমান করোনার প্রকোপ কমাতে বর্ধমান শহরের ৩৫টি ওয়ার্ড জুড়েই লকডাউনের কথা। আর বুধবার সকাল থেকেই গোটা শহর জুড়েই শুরু হয়ে গেল লকডাউন। আচমকাই ফের আরও একটা আপাতত ৭দিনের এই লকডাউনের মুখে পড়ে রীতিমত নাকানিচোবানি খেলেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই বুঝতে পারেননি বুধবার সকাল থেকেই শহর জুড়ে লকডাউন ঘোষণা হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা এদিন সকালেই নিত্যদিনের মতই বাজার দোকানে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু পথেই জায়গায় জায়গায় পুলিশ কর্মীরা তাঁদের বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতেই জেলাশাসকের ঘোষণার পরই গোটা শহর জুড়ে মাইকিং করা হয়। বুধবার সকালেও তা ছিল অব্যাহত। এদিকে, শহরের বাইরে থেকে যাঁরা এদিন শহরে আসতে চেয়েছিলেন বিভিন্ন কারণে তাঁরাও আচমকা আটকে পড়ায় সমস্যায় পড়েন। এদিন শহরে ঢোকার পথে পুলিশ ব্যারিকেড করে সাধারণ মানুষকে আটকে কারণ জানতে চেয়েছে। উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বস্তুত, এর আগেও লকডাউনের সময় যেমন কিছু মানুষ সবকিছুকে উপেক্ষা করার প্রবণতা দেখিয়েছিলেন, এদিনও কিছু মানুষ রীতিমত অজুহাত দেখিয়ে পার পাবার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু এদিন কড়া হাতেই পুলিশ কর্মীরা তার মোকাবিলা করেছে।


উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫২জন। বর্ধমান শহরেই ছিল ২৮ জন। বুধবার জেলায় নতুন করে আরও ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনা ভাইরাসে। মঙ্গলবার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৬৫ জন। তারমধ্যে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮৬জন। তারমধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।  বুধবার এই পরিসংখ্যায়ন পাল্টে গিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭৮-এ। সক্রিয় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৯২। মোট মৃতের সংখ্যা ৫জন। বুধবার বর্ধমান শহরের লস্করদিঘী এলাকায় এবং রানীগঞ্জ বাজার এলাকায় আরও দুই ব্যক্তির করোনায় মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।


সবমিলিয়ে কেবলমাত্র বর্ধমান শহরেই গত কয়েকদিনে প্রায় ৭৩জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরই মাঝে খোদ বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে মঙ্গলবার বর্ধমানের ক্যামরী কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও সংশোধনাগার সূত্রে জানা গেছে, গত দশ দিন সুপার সাহেব অফিস আসেননি। শারীরিক অসুস্থতা থাকায় তিনি ছুটিতে ছিলেন। এরই মধ্যে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে হুগলি থেকে ডেপুটেশনে নতুন অফিসার দায়িত্ব নিয়েছেন। জেল সূত্রে আরও জানা গেছে, এখনও কোনো বিচারাধীন বন্দির করোনা আক্রান্ত হবার খবর মেলেনি।


অপরদিকে, এরই পাশাপাশি বর্ধমানের রায়নার তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘড়ুইয়ের দেহরক্ষী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বুধবার থেকেই বিধায়ককে হোম কোয়ারেণ্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা রায়না জুড়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশেষত, মঙ্গলবারই তৃণমূলের শহীদ দিবস ছিল। খোদ বিধায়কের উপস্থিতিতেই এই শহীদ দিবস পালন হয়েছে। ফলে নতুন করে আতংক দানা বেঁধেছে। কার্যত, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকার কারণেই শহর জুড়ে লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও শহরের বাইরেও করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা এখনও চলতে থাকায় গোটা জেলা জুড়েই ফের লকডাউনের ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});