Headlines
Loading...
বর্ষার কারণে নদী থেকে বালি তোলার সময়সীমা একমাস বাড়ানোর দাবি ঘাট মালিকদের

বর্ষার কারণে নদী থেকে বালি তোলার সময়সীমা একমাস বাড়ানোর দাবি ঘাট মালিকদের


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: রাজ্যের মুখ্য সচীবের নির্দেশ আসার পরই শর্তসাপেক্ষে পূর্ব বর্ধমান জেলার বালিঘাটগুলিকে খুলে দেওয়া হয়েছিল শনিবার। কিন্তু গলসির শিকারপুরের ৮ টি এবং কালনার দুটি বালিঘাট কে খোলার নির্দেশ ছিলনা। সোমবার জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়ে দিলেন, বন্ধ থাকা ঘাটগুলিও খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক এদিন জানিয়েছেন, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত্রে গলসী থানার শিকারপুরে বালির ডাম্পার উল্টে একই পরিবারের ৫জনের মৃত্যুর ঘটনায় শিকারপুর এলাকার ৮টি বালিঘাটকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার থেকে সেই ৮টি ঘাট এবং কালনার ২টি সহ জেলার সমস্ত বৈধ ঘাটগুলিকেই খুলে দেওয়া হয়। 

জেলাশাসক জানিয়েছেন, শিকারপুরের ঘটনায় মৃতের পরিবারের হাতে সোমবারই ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ তুলে দেওয়া হচ্ছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে বালিঘাট খুললেও করোনা সংক্রান্ত ১০ দফা বিধি নিষেধ তাঁদের মানতে হবে। অন্যথায় তাঁদের বালিঘাট বন্ধ করা এবং প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। জানা গেছে, গত ৪মে রাজ্যের মুখ্য সচিব একটি নির্দেশ জারি করে শর্তসাপেক্ষে বালিঘাট গুলিকে খোলার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মোতাবেক ১০দফা শর্ত আরোপ করা হয় বালিঘাট গুলি চালানোর ক্ষেত্রে। আর এরপরেই গত ৮মে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী নির্দেশ জারি করেন। 

এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন, বালিঘাট চালু হলেও কোথাও বালি মজুদ করা যাবে না। রেড জোনে বা রোড জোন থেকে কোনো গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে না। কেবলমাত্র কন্টেনমেণ্ট জোন বাদ দিয়ে জেলার যে সমস্ত প্রান্তে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে সরাসরি বালিঘাট থেকে সেখানেই বালি নিয়ে যাওয়া যাবে। বালি উত্তোলন এবং গাড়ি যাতায়াত কেবলমাত্র সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা যাবে। এদিকে বালিঘাট গুলো খুলে দেওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ আবার রোজগারের রাস্তায় ফিরতে পারবেন বলে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার মানুষ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেড় মাসের ওপর বন্ধ থাকার পর ফের বালি খাদানের কাজ স্বাভাবিক হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও ঘাট মালিকদের দুশ্চিন্তা কাটছে না। কারণ হিসেবে একাধিক ঘাট মালিক জানিয়েছন, বর্ষা আসন্ন। নিয়মমতো ১৫জুন থেকে নদী থেকে বালি তোলা সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় প্রতিবছর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এবছর বালি কারবারের মূল সময়ে বড়সড় ধাক্কা এসেছে। আর এরই মাঝে একমাসের মধ্যে যদি ফের বালি তোলার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেও শেষমেষ বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তাঁরা। 

বালিঘাট মালিকদের একাংশ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই সম্ভাবনার কথা জেলাশাসক কে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, এই সময়সীমা আরও একমাস বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়েও আবেদন জানানো হয়েছে প্রশাসনের কাছে। সেক্ষেত্রে ১৫ জুনের পরিবর্তে জুলাই মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বালি তোলার কাজ যাতে চালিয়ে যেতে পারেন ঘাট মালিকরা সে ব্যাপারেও আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থার অনুমোদন পেলে লকডাউনের ফলে ক্ষতির অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে। এদিকে সোমবার থেকেই বর্ধমানের দামোদর তীরবর্তী একাধিক বালিঘাটে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে গেছে। যদিও কয়েকটি জায়গায় সরকারি নির্দেশ মেনে বালি তোলার কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});