Headlines
Loading...
ভোট পরবর্তী সংঘর্ষ অব্যাহত বর্ধমান জেলা জুড়ে

ভোট পরবর্তী সংঘর্ষ অব্যাহত বর্ধমান জেলা জুড়ে


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে ভোট পরবর্তী সংঘর্ষ অব্যাহত। শনিবার সকালে আউশগ্রামের করোটিয়া গ্রামে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপি তৃণমুল সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ালো গোটা এলাকায়। তৃণমুলের অভিযোগ, এই গ্রামে ১০০ দিনের কাজ চলছিল। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর সিপিএম থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া লাল বিজেপি সমর্থকরা কাজ বন্ধ করে দেন। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় বিডিও ১০০ দিনের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু স্থানীয় তৃণমুল নেতৃত্ব শনিবার সকালে ফের কাজ শুরু করলে তাতে বিজেপি বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এরপরই সংঘর্ষ বাধে। অভিযোগ বিজেপি সমর্থকরা এরপরই চড়াও হয় স্থানীয় তৃণমুল নেতাদের বাড়িতে। আউশগ্রামের করোটিয়া গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মনোজ পাল ও বুথ কমিটির সদস্য বাদল মাজির বাড়ি ভাঙচুর করা হয়, মারধরও করা হয়। একইসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল পার্টি অফিসও বিজেপি দখল করে বিজেপির দলীয় পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশের টহল শুরু হয়েছে। এব্যাপারে বিজেপির স্থানীয় নেতা বিশ্বজিত বাগ্দী জানিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজে স্বজনপোষণের বিরোধিতা করায় তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। আর তাই তারাও পাল্টা হামলা চালিয়েছেন।


অন্যদিকে,গণনার দিন বিজেপি দলের হয়ে রান্না করার অপরাধে এক ব্যক্তির দোকান ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেবার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের গাংপুর হাটতলায়। দোকান মালিক রামপ্রসাদ বাগ জানিয়েছেন, এই সাইকেলের দোকান চালিয়েই তাঁর সংসার চলে। সংসার চালাতে রান্নার কাজও করেন। গণনার দিন বিজেপি দলের পক্ষ থেকে রান্না করার অর্ডার পান। আর তারপরেই শুক্রবার রাতে তার দোকানে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।


অন্যদিকে ভোটে বিজেপির অভাবনীয় জয়ের উল্লাসে বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে এদিন ব্যাপক গোলযোগ ছড়ায় কালনার ময়নাগুড়ি গ্রামে। প্রথমে বচসা, পরে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীরা। মিঠু দাস নামে তৃণমূলের এক কর্মীর স্ত্রীকে মারধর করার পাশাপাশি তার মাথায় কাটারির কোপ মারার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আহত মিঠু দাসকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লোকসভা ভোটে বিজেপি ভালো ফল করায় এলাকার কিছু যুবক এদিন আনন্দে বাজি ফাটাচ্ছিলো। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে গ্রামের বাচ্চারাও বাজি ফাটানো শুরু করে। ওই বাচ্চাদের ছোড়া বাজি গিয়ে পড়ে গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসে কর্মী সঞ্জয় দাসের বাড়িতে। তা নিয়ে অশান্তি চরমে ওঠে। অভিযোগ ওই সময়েই বিজেপি নেতা বসন্ত মল্লিকের নেতৃত্বে কিছু লোকজন তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় দাসকে ধরে মারধর শুরু করে দেয়। সেই সময় বাধা দিতে গেলে তাঁর স্ত্রী মিঠু দাসকেও বিজেপির লোকজন প্রথমে বাঁশ দিয়ে মারধর করে তার মাথায় কাটারির কোপ বসিয়ে দেয় বলে সঞ্জয় দাসের অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে কালনার বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, সবটাই গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। বিজেপির নামে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
এদিকে ভোট গণনা পরবর্তী হিংসা ছড়িয়েছে মঙ্গলকোটে। ১০ জন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বিজেপির লোকজন ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ। ভাঙচুর চালান হয়েছে তৃণমূল কর্মীদের বাইক।মঙ্গলকোটর চাণক, গোতিষ্ঠা ও পলিগ্রাম অঞ্চলে বসবাস আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের ফল ঘোষনার পরেই সামনে আসে মঙ্গলকোট ব্লকে ৩০ হাজার ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি। তার পর থেকেই বিজেপির লোকজন বেছে বেছে তৃণমূল কর্মী পরিবারে হামলা ও ভাঙচুর চালান শরু করে। যদিও মঙ্গলকোটনিবাসী বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দী বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাস জানিয়েছেন তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে।

এদিকে, জেলা জুড়ে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানালো জেলা তৃণমুল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, এদিন পুলিশ সুপার না থাকায় তাঁরা মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। এই ধরণের ঘটনা রোধে প্রশাসনকে সঠিক ব্যবস্থা নেবার আবেদন জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী জানিয়েছেন, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরাই দলীয় নেতাদের দুর্নীতি এবং স্বজন পোষণের অভিযোগে বিজেপির নাম করে অশান্তি করছে। এব্যাপারে দলীয় কর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});