ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,নদীয়াঃ জম্মু কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হল নদীয়ার তেহট্টের বাসিন্দা সিআরপিএফ জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের। তেহট্ট মহকুমার পলাসিপাড়া থানার হাঁসপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ বিশ্বাস ২০১৪ সালে সেনা বাহিনীতে যোগ দেন।
বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাস পেশায় দিন মজুর ও মা মমতা বিশ্বাস গৃহবধূ। চরম দারিদ্রতার মধ্যে বড় হওয়া সুদীপের ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। সেই স্বপ্ন তার সত্যিও হয়েছিল। সিআরপিএফ-এর ৯৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ান ছিলেন সুদীপ। একদিকে গ্রামের ছেলে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ায় যেমন গর্বের অন্ত ছিল না স্থানীয় বাসিন্দাদের, তেমনই ছেলের চাকরীর জন্য ধীরে ধীরে সচ্ছলতার মুখ দেখছিল বিশ্বাস পরিবার। ছেলের উপার্জনে কয়েক মাস আগে মেয়ের বিয়েও দিয়েছিলেন সন্ন্যাসী বাবু ও মমত দেবী। ভাবনা ছিল চলতি বছরে সুদীপের বিয়েও দেবেন তারা। কিন্তু' ১৪ ফেব্রুয়ারির অভিশপ্ত বিকেল সমস্ত হিসেব উল্টে দিল এই বিশ্বাস পরিবারের। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ের উপর সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় জওয়ান সুদীপ বিশ্বাস এর শহীদ হওয়ার খবর শুক্রবার সকালে পেল তার পরিবার। পরিবার সূত্রে খবর,চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২৫ দিনের ছুটি কাটিয়ে জম্মুতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন সুদীপ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩টের সময় শেষ বারের মতন গ্রামের বাড়িতে ফোন করেছিল সুদীপ।পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো তখনই সুদীপের কথা হয়। ফোনে সুদীপ মা, বাবকে চিন্তা করতে বারণ করেছিল। এবার তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবে বলে আশ্বস্ত করেছিল সে। বাড়ি 'ফিরছে' সুদীপ, তবে কফিনবন্দি হয়ে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম, সুদীপকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন গোটা বিশ্বাস পরিবার ও হাঁসপুকুরিয়া গ্রামের মানুষ। অসহায় পরিবার ও শোকস্তব্ধ গ্রামের মানুষ এখন অপেক্ষায় নিহত জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
গ্রামের গর্ব সিআরপিএফ জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের জঙ্গী হামলায় মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে তেহট্টের হাঁসপুকুরিয়া গ্রামের মানুষ জন।যে ভাবে জঙ্গীদের হামলার কারণে ৪৪ জন জওয়ান কে প্রাণ দিতে হল তার বদলা চেয়ে পাকিস্তান কে উপযুক্ত উত্তর দেওয়ার দাবী জানালো মৃত জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের এলাকাবাসী। তাদের দাবি এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে অবিলম্বে হামলার জবাব হামলা দিয়েই দিক সরকার।