Headlines
Loading...
 বর্ধমানে লক্ষাধিক টাকা ফিরিয়ে সততার নজির গড়েছে সামান্য চায়ের দোকানি।

বর্ধমানে লক্ষাধিক টাকা ফিরিয়ে সততার নজির গড়েছে সামান্য চায়ের দোকানি।


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,রায়না: ভুরিভুরি অসততার ঘটনার মাঝেই সততার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার গোপালপুরের সামান্য একটি চায়ের দোকানের মালিক। হাতের মুঠোয় ৪৩ হাজার টাকা পেয়েও ফেরত দিয়ে দিলেন যার টাকা তাঁকে। রাস্তার ধারে চায়ের দোকান চালিয়ে যেটুকু আয় হয় তাই দিয়েই অতিকষ্টে দিনযাপন করেন শ্রীমন্ত সাঁতরা। তবু হাজার কষ্টের মধ্যেও সততাকে তিনি বিসর্জন দেননি। আর তাই গত বছর খানেকের মধ্যে তাঁর দোকানে চা খেতে এসে ফেলে যাওয়া প্রায় লক্ষাধিক টাকা হাতে পেয়েও শ্রীমন্ত সাঁতরা অনায়াসে ফেরত দিয়ে দিয়েছেন হতভাগ্যদের হাতে। 
শ্রীমন্ত সাঁতরার দাদা অশোক সাঁতরা জানিয়েছেন, বর্ধমান আরামবাগ রোডের গোপালপুর মোড়ে ভাই শ্রীমন্ত সাঁতরার একটি ছোট চায়ের দোকান রয়েছে। তা থেকেই তিনি সংসার চালান কোনোরকমে। শনিবার সকালে একটি ডাম্পারের চালক তার দোকানের সামনে এসে দাঁড়ান। তার দোকানে বসে চাও খান। এরপর চলে যান। দুপুরবেলায় দোকান বন্ধ করে বাড়িতে খেতে আসার সময় হঠাতই তিনি লক্ষ্য করেন একটি গামছা পড়ে রয়েছে দোকানে। গামছাতে হাত দিতে গিয়েই বুঝতে পারেন গামছার মধ্যে কিছু রয়েছে। গামছা খুলে দেখেন টাকার বাণ্ডিল। মোট ৪৩ হাজার টাকা। হটাৎই তাঁর খেয়াল পরে ডাম্পার চালকের কথা। এর আগেও এই ডাম্পার চালক তার কাছে চা খেয়ে গেছেন। পরিচিতও। এরপরই তিনি ফোন করেন বীরভূমের বোলপুরের বাসিন্দা ডাম্পার চালক বাপি বাগকে। শ্রীমন্তের ফোন পেয়ে বাপি আসেন গোপালপুরে। সেখানেই তার হাতে তুলে দেন ৪৩ হাজার টাকা। 
শ্রীমন্ত সাঁতরা জানিয়েছেন, এদিনই বাপি বাগ বোলপুর থেকে পাথর নিয়ে এসেছিলেন শ্যামসুন্দরে। সেখান থেকে পাথরের দাম ৪৩ হাজার টাকা নিয়ে তিনি ফিরছিলেন। চা খেতে এসে ভুলে গামছা ফেলে চলে যায় সে। যার জিনিস তাকে ফেরত দিতে পেরে ভালো লাগছে। 
দাদা অশোক সাঁতরা জানিয়েছেন,এমন ঘটনা শ্রীমন্তর সঙ্গে এটাই প্রথম নয়,প্রায় ৭ মাস আগে ওই বাপি বাগেরই এক বন্ধু চা খেতে এসে একটি দামী মোবাইল ফোন এবং নগদ ১৭ হাজার টাকা ফেলে চলে যান। তাকেও ডেকে টাকা ফেরত দেন শ্রীমন্ত। বছর খানেক আগে রায়না থানার নন্দনপুরের এক ব্যক্তি চা খেতে এসে ভাইয়ের দোকানে একটি ব্যাগ ফেলে চলে যান। পরে দেখা যায় তাতে প্রায় ১ লক্ষ টাকা রয়েছে। অনেক কষ্ট করে তার ঠিকানা জোগাড় করে তার টাকাও ফেরত দেন শ্রীমন্ত সাঁতরা। অশোক বাবু জানান,হাজার কষ্টের মধ্যেও ভাই যে নিজের মনুষত্ব বিসর্জন দেয়নি তার জন্য তাঁদের গর্ববোধ হয়। 









(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});