Headlines
Loading...
বর্ধমানে গ্রন্থাগার নিয়ে মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতাদের মঞ্চে বসিয়েই সরকারের সমালোচনা।

বর্ধমানে গ্রন্থাগার নিয়ে মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতাদের মঞ্চে বসিয়েই সরকারের সমালোচনা।


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত ওয়েষ্ট বেঙ্গল স্টুডেণ্টস্ অফ লাইব্রেরী সায়েন্স অর্গানাইজেশনের ৭ম বার্ষিক রাজ্য সম্মেলনে রাজ্যের মন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতাদের মঞ্চে বসিয়েই রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিতে শূন্যপদ পূরণে কার্যত রাজ্য সরকারকেই সমালোচনায় বিঁধলেন সংগঠনের রাজ্য নেতারা।রবিবার এই সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পার্থ ব্যানার্জ্জী লিখেছেন – ভারতবর্ষে গ্রন্থাগার আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গের স্থান একদম প্রথম দিকে ছিল। তিনকড়ি দত্ত, কুমার মনীন্দ্রদেব রায়, প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়, প্রবীর রায় চৌধুরী প্রমুখরা পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার আন্দোলনকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার ব্যবস্থার কঙ্কালসার চেহারা ফুটে উঠেছে।
তিনি লিখেছেন, - গ্রন্থাগার বিজ্ঞান পড়বার সময় অনেক স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছিলেন। চোখে স্বপ্ন ছিল চাকরী পেলে গ্রন্থাগার ব্যবস্থার চিত্রকে বদলে দেবার। কিন্তু সময় যত পার হচ্ছে ততই সে স্বপ্ন আরও ফিকে হয়ে যাচ্ছে। তিনি লিখেছেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থা সমগ্র ভারতবাসীকে পথ দেখিয়েছিল। কিন্তু এখন ভারতের ৩০টি অঙ্গ রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনায় পশ্চিমবঙ্গের স্থান প্রায় শেষের দিকে। আর এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য গ্রন্থাগার গঠন ও তার সঙ্গে প্রশিক্ষিত নিয়োগের দাবীতেই এই অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠা।
তিনি লিখেছেন – সংগঠনের দাবী আদায়ের জন্য বর্তমান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী, গ্রন্থাগার মন্ত্রী প্রমুখদের সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আশ্বস্ত হবার মত কোনো মন্তব্য শুনতে পাওয়া যায়নি।
শুধু পার্থ ব্যানার্জ্জীই নয়, এদিন রাজ্য সরকারের গ্রন্থাগারমন্ত্রীরও সমালোচনা করা হয়েছে রাজ্য সহ সভাপতি রাধাকান্ত মণ্ডলের লেখায়। তিনি লিখেছেন, গোটা রাজ্যে প্রায় ৬০০টি গ্রন্থাগার বন্ধ। ৩০০০টিরও বেশি শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগের ব্যাপারে কোনো সঠিক ভূমিকা দেখতে পাননি। বিভিন্ন পত্রিকায় গ্রন্থাগারমন্ত্রী আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে ফলপ্রসূ হয়নি।
উল্লেখ্য, রাজ্যের গ্রন্থাগার দপ্তরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী প্রায় প্রতি জেলাতেই বৈঠকের পর সাম্প্রতিককালে জানিয়েছেন, শূন্যপদ পূরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত দিয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই শূন্যপদ পূরণ হবে। কয়েকদিন আগে বর্ধমানে জেলার লাইব্রেরী নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের পরও সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী একই কথা বলেছেন। ফলে এদিন ওয়েষ্ট বেঙ্গল স্টুডেণ্টস অফ লাইব্রেরী সায়েন্স অর্গানাইজেশনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে খোদ দলেরই মন্ত্রী এবং সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও এব্যাপারে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি প্রদীপ কুমার মজুমদার বলেছেন, তাঁরা এভাবে সমালোচনা করেননি। তাঁরা তাঁদের দাবীই জানিয়েছেন। গ্রন্থাগারগুলিকে সচল করা, সাধারণ মানুষকে গ্রন্থাগারমুখী করে তোলার লক্ষ্যেই তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই দাবী জানিয়ে আসছেন। শূন্যপদ পূরণ না করে শুধুমাত্র আসবাবপত্র, ইট , কাঠ ও ইণ্টারনেটে গ্রন্থাগার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
                                                                                                            ছবি - সুরোজ প্রসাদ 
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});