Headlines
Loading...
বর্ধমানের ক্রাইষ্ট চার্চের ২০০তম বর্ষে এবছর বড়দিন আরও জমকালো।

বর্ধমানের ক্রাইষ্ট চার্চের ২০০তম বর্ষে এবছর বড়দিন আরও জমকালো।


মালা ঘোষ,বর্ধমান: বর্ধমানের ক্রাইষ্ট চার্চের ২০০ তম বছরকে সামনে রেখে এবারের খ্রিষ্টমাস নতুনভাবে পালন করতে উদ্যোগী হল চার্চ কর্তৃপক্ষ। আয়োজন করা হয়েছে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। একইসঙ্গে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে প্রাচীন এই চার্চটির সংস্কারেরও।  এ ব্যাপারে চার্চ-এর পরিচালন কমিটির পক্ষে রাহুল মাইলি জানিয়েছেন, চার্চটির সংস্কারের লক্ষ্যে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা ১৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে। সেই টাকায় সংস্কার করা হচ্ছে  চার্চ সংলগ্ন রাস্তা ও লনের। এছাড়া চার্চের ভিতর দিয়ে সাধারণ মানুষের বাজারে আসা-যাওয়া করার কারণে চার্চের সৌন্দর্য্য ও নিরাপত্তার যে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে তা দূর করতে বন্ধ করে দেওয়া হবে শহরের বিসি রোডের সঙ্গে চার্চের ভিতরের রাস্তার সংযোগটিও।

বর্ধমান শহরের কার্জন গেটের পাশে ক্রাইষ্ট চার্চটির নির্মাণ করেন ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্ট।  প্রায় দুশো বছর আগে ১৮১৬ সালে লন্ডনের চার্চ মিশন থেকে তিনি বর্ধমানে আসেন। এই শহরে খ্রিস্টান ধর্মের উপাসনার জন্য চার্চ নির্মাণের পাশাপাশি তিনি খোলেন তিনটি মিশনারি স্কুলও। যদিও সেই স্কুলে পড়তে আসত সব ধর্মের ছেলেমেয়েরা। এগুলির মধ্যে বর্ধমান সি এম এস হাইস্কুলের নাম আজ জেলার প্রায় সকলেই জানে। তাঁর তৈরী প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চটি আজ হেরিটেজ স্থাপত্য। সেই কারণে এটি রক্ষা করতে উদ্যোগী হয়েছে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা। সংস্থার তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।

 শ্রী মাইলি জানিয়েছেন , এবছর ২৫ ডিসেম্বরের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই উৎসবের আয়োজন করছেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে শহরের পার্কাস রোডের সেক্রেট হার্ট চার্চও (ক্যাথলিক)। বড়দিন উপলক্ষে ১৭ ডিসেম্বর শহরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রারও আয়োজন করা হয়। তাতে যোগ দেন শহরের খ্রিস্টান ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষও। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে তাঁদের এই অনুষ্ঠান। ২৪ ডিসেম্বর আয়োজন করা হয়েছে অনুষ্ঠান 'সান্তাক্লজ আসছে '। এছাড়া থাকছে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও নানা ধরনের আলোর কাজ। খ্রিসমাস ট্রি হিসাবে সাজানো হচ্ছে চার্চ সংলঙ্গ দেবদারু গাছগুলি। উৎসবে যোগ দিতে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও দুই বর্ধমানের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও আসবেন বলে জানিয়েছে চার্চ কতৃপক্ষ। বিশ্বের শান্তি কামনায় ৩১ ডিসেম্বর করা হবে মিডনাইট প্রেয়ার। অনুষ্ঠান চলবে ১ জানুয়ারী সকাল পর্যন্ত।


শহরের সেক্রেট হার্ট ক্যাথলিক চার্চের পরিচালন কমিটির সদস্য জেভিয়ার খালকো জানান, তাঁরা রোমান ক্যাথলিক মতে যীশুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালন করবেন। উৎসব উপলক্ষে চার্চের ভিতর-বাইরে সাজানো হচ্ছে নানা ধরনের আলো ও সাজসজ্জায়। থাকছে  যীশুর জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে একাধিক প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী দেখতে প্রতি বছর বহু মানুষ চার্চে ভিড় করেন বলে জানালেন জেভিয়ার। এবারও সব ধর্মের মানুষ এই উৎসবে যোগ দেবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।

বর্ধমানের দুশো বছরের পুরোন প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চটির সংস্কারের সাথে সাথে সংস্কার করা হছে শহরের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের একমাত্র সমাধিস্থলটিও। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বর্ধমান পুরসভার পক্ষ থেকে। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান শহরে প্রায় ৭০০-৮০০ খ্রিষ্টান পরিবারের বাস। তাদের ব্যবহৃত শহরের কাছারি রোডের কবরখানাটি খুবই প্রাচীন। সংস্কারের এভাবে এটি ভেঙেচুরে পড়ে ছিল। চারিদিক জঙ্গলও হয়ে গেছিল। এটির সংস্কারে রাজ্য পুরদপ্তর থেকে ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।  সেই টাকায় কবরখানা সংস্কার করে আলো লাগানোর কাজ চলছে।





(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});