Headlines
Loading...
বর্ধমানে দেশের মধ্যে প্রথম কালনায়  চালু হতে চলেছে  নিখরচায় বৃদ্ধাশ্রম।

বর্ধমানে দেশের মধ্যে প্রথম কালনায় চালু হতে চলেছে নিখরচায় বৃদ্ধাশ্রম।

সৌরীশ  দে,  বর্ধমান:  দেশের মধ্যে সম্ভবত প্রথম পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমার বৈদ্যপুরের তোলা গ্রামে  চালু হতে চলেছে সম্পূর্ণভাবে নিখরচায় বৃদ্ধাশ্রমে থাকার সুযোগ। আগামি ১৫ আগস্ট পথ চলা শুরু করবে এই   বৃদ্ধাশ্রম। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি। বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,এই ধরণের অভিনব উদ্যোগ বেসরকারী ক্ষেত্রে এখনও নেই। এটি চালু হলে তা হবে দেশের মধ্যে প্রথম নজীরবিহীন ঘটনা।'বেলাশেষে ' এই বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলছে বৈদ্যপুরের তোলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার সমাজকল্যাণ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু। 
সভাধিপতি জানিয়েছেন, সমাজের অবহেলিত, নিপীড়িত, আর্থিক ভাবে দুর্বল বয়স্ক মানুষদের শেষ জীবনের কথা চিন্তা করে  বড় ধরণের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থার সভাপতি প্রণব রায় জানিয়েছেন, তাঁদের এই সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজকর্ম করে আসছেন। গোটা এলাকার মানুষের চোখের ছানি অপারেশনের মত শিবির ও প্রতি সপ্তাহে পরীক্ষাকেন্দ্র চালিয়ে আসছেন সম্পূর্ণ নিখরচায়। এবার তাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন এই বৃদ্ধাশ্রমের। তোলাগ্রামের অশোক মণ্ডলের পরিবার এই বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার জন্য এক বিঘের কিছু বেশি জমি দান করেছেন। সেই জমিতেই গড়ে উঠছে এই বৃদ্ধাশ্রম।  এলাকার সাংসদ সুনীল মণ্ডল এই বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার জন্য দু দফায় সাংসদ কোটা থেকে দিয়েছেন ২০ লক্ষ ও ২৫ লক্ষ মোট ৪৫ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই একতলার কাজ শেষ। দ্রুতগতিতে চলছে দোতলার কাজ।

 সাংসদ জানিয়েছেন, এই বৃদ্ধাশ্রমে প্রথম দফায় থাকতে পারবেন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা সহ মোট ২৫জন। বৃদ্ধাশ্রম দেখভাল করার জন্য ইতিমধ্যেই এই সংস্থার পক্ষ থেকে ১১ জনের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ এই ধরণের বেসরকারী বৃদ্ধাশ্রমগুলিতে থাকতে গেলে এককালীন বা বাত্সরিক একটি অর্থ নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা এখানে থাকার জন্য কোনোরকম কোনো অর্থই নিচ্ছেন না। আবেদনের ভিত্তিতে তাঁরা বিচার বিবেচনা করেই এখানে থাকার সুযোগ দেবেন।  তিনি জানিয়েছেন,  তাঁদের কাছে ৩৫টি আবেদন পত্র ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে। তাদের মধ্যে থেকে ১৫জনকে তারা বাছাই করেছেন।  এরই মধ্যে রাজ্যের বেশ কয়েকজন অভিনেতা ও অভিনেত্রী আর্থিক সাহায্য করার জন্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তাঁরা সবিনয়ে তাঁদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রণববাবুর পাশাপাশি সংস্থার সদস্য সুশোভন হালদার জানিয়েছেন, এই সমস্ত বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের সর্বক্ষণের দেখভাল করার জন্য আলাদা লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে তাদের জন্য থাকছে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও। প্রণববাবু জানিয়েছেন, তাঁরা এই আশ্রম পরিচালনার জন্য এলাকার মানুষদের কাছ থেকে সাহায্য তুলবেন। সাধারণ মানুষের দেওয়া সাহায্যেই তাঁরা পরিচালনা করবেন এই বৃদ্ধাশ্রমকে।তিনি জানিয়েছে্ন,ইতিমধ্যেই তাঁরা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। সেখান থেকে কিছু সাহায্য পেলে তাঁদের পক্ষ থেকে এই আশ্রম পরিচালনা আরও সহজতর হয়ে যাবে। বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, এই ধরণের উদ্যোগ একেবারেই অভিনব। তিনি তাঁর সাধ্যমত সাহায্য করছেন এই প্রকল্পের জন্য।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});