Headlines
Loading...
খন্ডঘোষে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে এই আশংকায় গ্রামবাসীরা বন্ধ করে দিল বালি খাদান

খন্ডঘোষে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে এই আশংকায় গ্রামবাসীরা বন্ধ করে দিল বালি খাদান


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: করোনার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে এই আশংকায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে বন্ধ হয়ে গেল পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ ব্লকের সমস্ত বালিঘাট। আর এই ঘটনায় বুধবার থেকে ক্ষোভের পাশাপাশি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে দীর্ঘদিন পর সদ্য খোলা বালিঘাটগুলোর কতৃপক্ষের মধ্যে। যদিও জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর) শশীভূষণ চৌধুরী বুধবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি এই ঘটনার কথা শুনেছেন, কিন্তু এই মুহূর্তে প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ নেই। তবে খন্ডঘোষের বালিঘাট সংক্রান্ত বিষয়ে বিএলআরও কে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

বালিঘাট মালিকদের একাংশ এদিন জানিয়েছেন, প্রশাসনের নির্দেশে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত শনিবার করোনা সম্পর্কিত দশ দফা শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয় জেলার সমস্ত বালিঘাট। ইতিমধ্যে বালি খাদান এলাকায় কাজ করবে এইরকম সমস্ত  শ্রমিক এবং কর্মচারীদের তালিকা তৈরি করে স্থানীয় থানায় জমা করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে।

তাদের অভিযোগ, খন্ডঘোষ ব্লকের গৈতানপুর, শসংগা, নবগ্রাম প্রভৃতি এলাকার গ্রামবাসীদের একাংশ এদিন বালিঘাটগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে বাধা সৃষ্টি করেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন করোনা পরিস্থিতির কারণে লকডাউন মেনে তাঁরা এলাকার বাইরে বেরোতে পারছেন না। কিন্তু এরই মধ্যে বালিঘাট চালু হয়ে যাওয়ার ফলে বাইরে থেকে প্রচুর গাড়ি গ্রামে ঢুকছে। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশংকা রয়েছে। তাই কোনো গাড়ি ঢুকতে দেওয়া যাবে না। একইসাথে গ্রামবাসীরা দাবি করে এই পরিস্থিতিতে বালিঘাটও বন্ধ রাখতে হবে।

আর এরপরেই ঘাট মালিকেরা ঝামেলার আশংকায় বালি তোলার বা সরবরাহ করার কাজ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে যাবতীয় শর্ত মেনে রীতিমত ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা শুরু করার পরই গ্রামবাসীদের এই ঝামেলায় বেজায় বেকায়দায় পড়েছেন বালি কারবারিরা। বালি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু শ্রমিক এদিন জানিয়েছেন, দীর্ঘ লকডাউনের ফলে ছেলে সংসার নিয়ে না খেতে পেয়ে মরে যাবার উপক্রম হয়েছিল। সরকার নতুন করে বালি তোলার কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়ায় আবার আশার আলো দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, যাঁরা এই বালি ঘাটের কাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়, এমনই অনেক গ্রামবাসী মূলত এই কাজের বিরোধিতায় নেমেছে। আর এই জন্যই সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

তৃণমূলের খণ্ডঘোষ ব্লকের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম জানিয়েছেন, বালি তোলা নিয়ে কয়েকটি এলাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। মূলত খণ্ডঘোষ ব্লকের তিনজন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় খবরে এই এলাকার মানুষ এখনো আতঙ্কিত হয়ে আছেন। যদিও তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বাদুলিয়ার দুজন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ওপর একজনও কলকাতায় থাকলেও তিনি সুস্থ আছেন। তবুও, গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। আর এই আতঙ্ক ও আশংকা থেকেই বালি সংগ্রহ করতে বহিরাগত গাড়ি গুলোকে গ্রামে প্রবেশ করতে দিতে বাধা দিয়েছে স্থানীয়রা। অপার্থিব ইসলাম জানিয়েছেন, এই অবস্থা কেটে যাবে। প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্ত্ব দিয়ে দেখছেন।

অন্যদিকে, খন্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি ও রাজস্ব কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল পাঁজা জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের অভিযোগ শুনে বালিঘাট মালিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন খুব শীঘ্রই এই সমস্যা মিটে যাবে। সরকারি নির্দেশ মেনে বালিঘাট চললে কারোর কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়।
                                        ছবি - ইন্টারনেট (প্রতীকী)
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});