Headlines
Loading...
শিশুর শ্বাসনালীতে জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

শিশুর শ্বাসনালীতে জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ বিনা রক্তপাতের অস্ত্রোপচার করে ৭ মাসের এক কন্যা শিশুর শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়া বিনের টুকরো বার করে শিশুর প্রাণ ফিরিয়ে দিলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের একদল চিকিৎসক। বর্তমানে ওই শিশুকন্যাটি সুস্থ রয়েছে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ডা. গণেশ গাইনের নেতৃত্বে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে এই ঝুঁকিবহুল অস্ত্রোপচার করা হল সোমবার রাতে।

ডা. গণেশ গাইন জানিয়েছেন,ওই শিশু কন্যার নাম জেসিকা দীপ। আদিবাড়ি উড়িষ্যার সম্বলপুরে। বর্তমানে শিশুর বাবা জ্যোতিরাজ দীপ বীরভূমের সাঁইথিয়ার একটি খ্রীষ্টান চার্চের ফাদার। জেসিকার মা জ্যোত্স্নারাণী দীপ জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ তিনি তরকারী কাটছিলেন। সেই সময় ছোট্ট ৭মাসের শিশু জেসিকা একটি বিনের টুকরো খেতে গেলে তা তার শ্বাসনালীতে গিয়ে আটকিয়ে যায়। এরপর তাকে প্রথমে সাঁইথিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সোমবার তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করার পর সেখানে প্রাথমিক পরীক্ষার পর জানা যায় শিশুর শ্বাসনালীতে কিছু আটকিয়ে রয়েছে। এরপর তাকে ইএনটি বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে ডা. গণেশ গাইনের নেতৃত্বে শিশুর পরীক্ষা করা হয়। এরপরই দ্রুততার সঙ্গে শিশুর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন ডা গাইন। 

সোমবার রাত্রি ৮টা নাগাদ ডা. গণেশ গাইনের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক ডা. দেবব্রত দাস (ইএনটি),ডা. অনুরাগ প্রধান (ইএনটি), ডা. সুস্মিতা ভট্টাচার্য (এ্যানাসথেসিয়া), ডা. মৌমিতা দেব(শিশু বিশেষজ্ঞ), ডা. নওয়াজ রহমান (ইএনটি), ডা. মৈনান সামন্ত (ইএনটি) এবং সিস্টার মন্দিরা চ্যাটার্জ্জীকে নিয়ে গঠিত টিম অস্ত্রোপচার শুরু করেন। ডা. গণেশ গাইন জানিয়েছেন, কোনো রক্তপাত ছাড়াই শিশুর শ্বাসনালী থেকে অস্ত্রোপচার করে বিনের ওই টুকরো বার করা হয়। তিনি জানিয়েছেন ব্রঙ্কোসিস্ট রিজিট একটি পদ্ধতি যা গোটা রাজ্যের মধ্যে একমাত্র বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই করা হয় এবং তার সম্পূর্ণ পরিকাঠামো রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের আগে শিশুর শ্বাস প্রশ্বাসের হার কমে দাঁড়িয়েছিল ৪০ শতাংশে। অস্ত্রোপচারের পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ শতাংশে। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় শিশুর একটি হৃদযন্ত্রের কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল। বর্তমানে শিশুটি বিপদমুক্ত। তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের পিকুতে ভর্তি করা হয়েছে। যেভাবে শিশুটিকে কার্যতই মৃত্যুর মুখ থেকে চিকিৎসকরা দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকি নিয়ে এই অস্ত্রোপচার করে সুস্থ করেছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শিশুর বাবা ও মা। 
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});