ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: কিছুদিন আগেও রাজ্যে পুরভোট নিয়ে তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। কার্যত কিছু রাজনৈতিক দল মাঠে নামার জন্য প্রায় কোমর কোষতে শুরুও করে দিয়েছিল। রীতিমত শুরু হয়ে গিয়েছিলো দেওয়াল দখলের লড়াই। কিছু দেওয়ালে প্রার্থীর নাাম ছাড়াই দলের প্রতীক দিয়েই লেখাও হয়েছিল। কিন্তু চলতি করোনা ভাইরাসের আতংকে কার্যত সবাই গৃহবন্দি। আর এরই মাঝে এবার করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সেই দেওয়াল লিখনই শুরু করলো কিছু গ্রামবাসী। কোথাও
দেওয়ালে লেখা হয়েছে তো আবার কোথায় সরাসরি রাস্তার ওপর রং তুলি দিয়ে সচেতনতার বার্তা এঁকে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এমনি দেওয়াল লিখন চোখে পড়ছে পথ চলতি মানুষের।
লকডাউন মেনে চলুন, সাবান দিয়ে হাত, মুখ বারবার পরিষ্কার করুন বা মাস্ক ব্যবহার করুন কিংবা লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরোবেন না ইত্যাদি নানান সতর্কতামূলক বার্তা লেখা থাকছে এই দেওয়াল লিখনে। সাধারন মানুষ এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেও একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, হাজার প্রচার করলেও কিছু মানুষের অজ্ঞতার জন্য আজ এই মহামারীর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে যখন টানা লকডাউন চলছে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে তখন জায়গায় জায়গায় চলছে লকডাউন ভাঙার ঘটনাও। পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশও। আর তারই পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে জায়গায় জায়গায় চলছে সরকারী, বেসরকারী প্রচারও। গত ২৫ তারিখ থেকে গোটা রাজ্য জুড়েই পূর্ণ মাত্রায় লকডাউন শুরু হয়েছে। যদিও তার আগে ২২ তারিখ থেকে কয়েকটি পুর এলাকায় এবং ২৩ তারিখ থেকে আরও কিছু এলাকাকে লকডাউনের অধীনে আনা হয়। এখনও পর্যন্ত তা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলার কথাও। কিন্তু লকডাউনের কার্যত ষষ্ঠ দিন থেকেই একটু একটু করে শুরু হয়েছে লকডাউন ভেঙে বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে আসার প্রবণতা। আর তার ফলে ক্রমশই আতংক বাড়ছে।
সরকারী ও বেসরকারীভাবে বারবার সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়া, সোস্যাল ডিসটেন্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানানো হলেও ক্রমশই তা ভাঙছে। অনেকেই গায়ের জোরে অধৈ্র্য্য হয়েই বেড়িয়ে পড়ছেন রাস্তায়। ফলে ক্রমশই চাপ বাড়ছে পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে কেবলমাত্র বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকাতেই ট্রাফিক পুলিশ প্রায় ৪৪জনকে লকডাউন ভাঙার জন্য আটক করেছে। এমনকি জায়গায় জায়গায় চলতি সময়ে রেশনের মাল সংগ্রহ করতে গিয়েও সমদূরত্ব ঘুচিয়ে ক্ষোভে, বিক্ষোভে মেতে উঠছেন সাধারণ মানুষ।
ফলে আগামী দিনে কি ঘটবে তা নিয়েই শংকিত সিংহভাগ মানুষ। এমনকি লকডাউন ভাঙার জন্য জেলার বেশ কিছু জায়গায় সচেতন নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ম ভঙ্গকারীদের দেখা দিচ্ছে বচসাও। এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে হোম কোরেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনো পজিটিভ কেস মেলেনি।